আমেরিকায় বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হল দু’জনের। গুরুতর জখম পাঁচজন। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের গুলিতে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বন্দুকবাজ। ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে জারি করা হয় জরুরি সতর্কতা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত তরুণের নাম ফিনিক্স ইকনার। তিনি সেখানকার এক ডেপুটি শেরিফের পুত্র এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন পড়ুয়া। কিন্তু কী কারণে তিনি গুলি চালিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, মায়ের পুরনো বন্দুক দিয়েই গুলি চালিয়েছেন ফিনিক্স। গুলিবিদ্ধ হয়ে যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নন। এর বেশি আর কিছু জানাতে চায়নি পুলিশ।
সূত্রের খবর, শেরিফের দপ্তরে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন অভিযুক্ত যুবক। সেখান থেকে বন্দুক পেয়ে থাকতে পারেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও ফিনিক্সের কাছে একটি শটগান পাওয়া গেছে, যদিও তা তিনি ব্যবহার করেছিলেন কিনা, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, প্রথমে ইকনার একটি রাইফেল জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করেন, তারপর সেটি ফেলে পিস্তল দিয়ে গুলি চালাতে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরিতে সেই সময় ছিলেন জোশুয়া সর্ম্যান্স নামে এক পড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে সাইরেন বেজে ওঠে, সকলে চিৎকার করতে থাকেন। পুলিশ এসে আমাদের লাইব্রেরি থেকে হাত তুলে বের করে নিয়ে যায়।’ আরেক পড়ুয়া রায়ান সিডারগ্রেন বলেন, ‘আমরা ৩০ জন একসঙ্গে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নীচতলায় লুকিয়ে পড়ি। দেখলাম ছুটে পালাচ্ছেন অনেকে। তখন শুধু বাঁচার কথা মাথায় ছিল।’
ভাইরাল একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, এক তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে বন্দুক। যাঁরা পালানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের দিকেই এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ছেন ওই বন্দুকবাজ। যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা সম্পর্কে পুলিশের তরফে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।
বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার পর সমস্ত ক্লাস ও অনুষ্ঠান বাতিল করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যাঁরা ক্যাম্পাসে আসেননি, তাঁদের স্পষ্টভাবে জানানো হয়, ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকতে। জরুরি অবস্থায় যোগাযোগের জন্য ৯১১ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশও দেওয়া হয়। গুলি চালানোর ঘটনা পর ৪৪ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীর এই ক্যাম্পাসে জরুরি লকডাউন জারি করা হয়।
ঠিক কী কারণে হঠাৎ কুড়ি বছরের ওই পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে হামলা চালালেন, সেটা স্পষ্ট নয়। এর নেপথ্যে কোনও ধরনের প্ররোচনা কাজ করছে, কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনা আরও একবার আমেরিকার অস্ত্র আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এই ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন, এখনই অস্ত্র আইনে বদলের কথা ভাবা হচ্ছে না।