ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ নিয়ে ফের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার এক নৈশভোজে রিপাবলিকান সেনেটর ও ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’-এর সদস্যদের উদ্দেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ পর্বে অন্তত চার বা পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছিল। যদিও কোন দেশের ক’টি বিমান ভূপতিত হয়েছিল, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অনেকগুলি যুদ্ধ থামিয়েছি। আর তা যথেষ্ট গুরুতর ছিল। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলা সংঘর্ষে যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছিল। আমার মনে হয় পাঁচটি জেট ধ্বংস হয়েছিল। দু’টি পারমাণু শক্তিধর দেশ পরস্পরকে আঘাত করছিল। এটি এক নতুন ধরনের যুদ্ধ ছিল।’
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার দায় পাকিস্তানের কাঁধে চাপিয়ে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানের মাটিতে একাধিক জঙ্গিঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। তার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও আক্রমণ শুরু করে। দু’দেশের মধ্যে চার দিন ধরে প্রবল সংঘর্ষ চলে, যা শেষ হয় ১০ মে সংঘর্ষবিরতিতে পৌঁছনোর মধ্য দিয়ে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর ডিজিএমও স্তরে আলোচনার ভিত্তিতে ওই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির কথা প্রথম জনসমক্ষে আনেন ট্রাম্প নিজেই। তিনি বারবার দাবি করেছেন, এই সংঘর্ষে তাঁর কূটনৈতিক মধ্যস্থতাই মূল ভূমিকা নিয়েছে। পাকিস্তান ট্রাম্পের ওই দাবি মেনে নিলেও, নয়াদিল্লি তা বরাবরই নস্যাৎ করেছে।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষ চলাকালীন পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল অনিল চৌহান স্বীকার করেছিলেন যে, পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতের কিছু বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে সঠিক সংখ্যা তিনি জানাননি।
এবার সেই বিতর্কেই ঘি ঢাললেন ট্রাম্প। যুদ্ধবিমান ধ্বংসের সংখ্যা সামনে এনে বিষয়টিকে আরও রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সংবেদনশীল করে তুললেন তিনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের আবহে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। এখন দেখার, তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লি বা ইসলামাবাদ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসে কি না।