• facebook
  • twitter
Monday, 28 July, 2025

মার্কিন দৈনিকের বিরুদ্ধে ৮৬ হাজার কোটি টাকার মামলা করলেন ট্রাম্প

কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে নাম জড়ানোয় বিস্ফোরক পদক্ষেপ করলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে নাম জড়ানোয় বিস্ফোরক পদক্ষেপ করলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন দৈনিক ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর বিরুদ্ধে প্রায় এক হাজার কোটি ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৮৬ হাজার কোটির বেশি টাকার মানহানির মামলা করলেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্ক আদালতে এপস্টিন ফাইলের নির্দিষ্ট কিছু অংশ প্রকাশের আবেদনও জানানো হয়েছে।

যদিও এই মামলার বিষয়ে ভাবিত নন সংবাদমাধ্যমটির পরিচালন কর্তৃপক্ষ। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর কর্ণধার ডো জোনস সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘আমাদের রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’ ট্রাম্পের মামলার বিরুদ্ধে তাঁরা আইনি লড়াই লড়বেন বলেও জানান জোনস।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরেই এপস্টিন ফাইল ঘিরে মার্কিন প্রশাসনে জোর চাপানউতোর চলছে। অভিযোগ, একসময় এপস্টিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ট্রাম্প। দাবি উঠেছে, যৌন পাচার মামলার অন্যতম নথিতে তাঁর নামও রয়েছে। এমনকি মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক সম্প্রতি জানিয়েছেন, নতুন ঘোষিত রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’-র অন্যতম লক্ষ্যই হল ‘এপস্টিন ফাইল’কে সর্বসমক্ষে আনা।

এই পরিস্থিতিতেই সম্প্রতি ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ এক বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের দাবি, ২০০৩ সালে এপস্টিনের ৫০তম জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠান ট্রাম্প, যেখানে টাইপরাইটারে লেখা বার্তার সঙ্গে ছিল এক নগ্ন মহিলার চিত্র।

ট্রাম্প ওই চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘তোমার প্রতিটা দিন যেন ভিন্ন অথচ দুর্দান্ত ভাবে গোপন হয়ে ওঠে।’ নীচে কেবল ‘ডোনাল্ড’ বলে স্বাক্ষর করেছিলেন তিনি। ট্রাম্প অবশ্য এর আগেই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি জীবনে কোনও দিন ছবি আঁকিনি। মেয়েদের ছবি তো আঁকিইনি। এ সব আমার ভাষা নয়।’

এই রিপোর্ট প্রকাশের পরই রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন ট্রাম্প। শুক্রবার ডো জোন্‌স মিডিয়া গ্রুপ ও রুপার্ট মার্ডকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মানহানির মামলা দায়ের করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ভুয়ো ও ভিত্তিহীন তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করেছে সংবাদপত্রটি।

এদিকে, ট্রাম্পের আইনজীবী তথা অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বন্ডি বৃহস্পতিবারই এপস্টিন সংক্রান্ত কিছু নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন। তাঁর মতে, জনস্বার্থে ২০১৯ সালের যৌন পাচার মামলার গ্র্যান্ড জুরির সাক্ষ্য এবং গিজলাইন ম্যাক্সওয়েলের মামলা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ প্রয়োজন। শুক্রবার নিউ ইয়র্কের এক বিচারকের কাছে এ সংক্রান্ত আবেদনও জমা পড়ে।

উল্লেখ্য, আমেরিকায় গ্র্যান্ড জুরি একটি প্যানেল, যেখানে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযুক্ত করার আগে প্রমাণ যাচাই করা হয়। সাধারণত এই প্রক্রিয়া ও সাক্ষ্যপত্র গোপন থাকে এবং আইনি সুরক্ষার আওতায় পড়ে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে আদালতের নির্দেশে তা প্রকাশ করা সম্ভব।