আবার কি যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে পশ্চিম এশিয়ায়। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যে ভাবে হামাসকে হুমকি দিচ্ছে, তাতে ফের যুদ্ধ অবসম্ভাবী বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে মার্কিন মুলুকে উড়ে এসেছিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তারপরেই নেতানিয়াহু হুমকি দিয়ে জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরের মধ্যে পণবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে, না হলে গাজ়ায় যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করতে বিন্দুমাত্র দেরি করবে না ইজরায়েল। যদিও এই দাবি আগেই করেছিলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই রিপাবলিকান নেতা জানিয়েছেন, ‘আমরা গাজার দখল নেব। আমাদের ওটা কিনতে হবে না। ওখানে কেনার মতো কিছুই নেই।’
পশ্চিম এশিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, আমরা পশ্চিম এশিয়ার মানুষদের কথা ভাবছি। আমরা এমন একটা পরিকল্পনা আনতে চলেছি। যার ফলে ওই অঞ্চলে প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হবে. এখানেই প্রশ্ন উঠছে ওখানকার বাসিন্দাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? সেই বিষয়ে ট্রাম্পের সাফ জবাব, ওই অঞ্চল সাফ করতে সেখানকার ২২ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়কে মধ্যপ্রাচ্যের ওই ভূখণ্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মিশর, জর্ডনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিকে অনুরোধও করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধ বিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে ইজ়রায়েল, এই অভিযোগে ইজরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া আপাতত বন্ধ রেখেছে হামাস। তাদের অভিযোগ, প্যালেস্টাইনিদের উত্তর গাজ়ায় ফিরে যেতে বাধা দিচ্ছে ইজরায়েল। পাশাপাশি গাজ়ায় সাহায্য পৌঁছতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। তাই আপাতত ইজরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিল হামাস। এর পরেই হামাসকে প্রকাশ্য হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। হামাসের যাবতীয় অভিযোগও অস্বীকার করে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গাজ়ায় সাহায্য প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগটি অসত্য। যুদ্ধবিরতির কোনও শর্তও ভাঙেনি ইজরায়েল। যাঁরা ইজরায়েলি সেনাছাউনি থেকে পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রাখছেন না, কেবল তাঁদেরকেই গুলি করা হচ্ছে। এই বিষয়টি কানে আসতেই সোমবার ট্রাম্প হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, ‘শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে যদি সব বন্দি ফিরে না আসেন, তবে আমি বলব তা ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি বাতিল করতে। ট্রাম্পের বক্তব্যের পরেই হামাসকে ছেড়ে কথা বললেন না নেতানিয়াহু। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গাজ়া উপত্যকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইজরায়েল।
হামাস-ইজরায়েলের যুদ্ধবিরতি চলছে। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই, যেন বারুদের স্তূপের উপরে রয়েছে সবটাই। যে কোনও মুহূর্তে ফের ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।