• facebook
  • twitter
Sunday, 11 May, 2025

ট্রাম্প বিরোধিতায় যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাজার হাজার মানুষের ঢল

গণ আন্দোলনের আঁচ এবার আমেরিকায়

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমেরিকার পথে তুমুল জনস্রোত

গণ আন্দোলনের আঁচ এবার আমেরিকাতেও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমেরিকার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ, যাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রতিবাদী মানুষদের অভিযোগ, ‘ট্রাম্প নিজের স্বার্থে আমেরিকাকে ক্ষতির মুখে ফেলছে। দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এর সমাধান হওয়া উচিত।’  জানা গিয়েছে শুধু ট্রাম্পই নন, ইলন মাস্কের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সে দেশে। সূত্রের খবর, বিভিন্ন সংগঠন ছাড়াও সাধারণ জনতা  ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। 

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপর থেকেই আমেরিকার খোলনলচে বদলে তাকে ঢেলে সাজাতে ব্যস্ত ট্রম্পের প্রশাসন। একাধিক নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের শিরোনামে বার বার উঠে এসেছে ট্রাম্পের নাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তাঁর অভিবাসন সংক্রান্ত নীতি ও নয়া শুল্ক নীতি। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশ। যার ধাক্কা এসে লেগেছে শেয়ার বাজার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে।

এর মাঝেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে আমেরিকায়। আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী শনিবার রাস্তায় নেমে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।প্ল্যাকার্ড হাতে হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল রাস্তা।ওয়া্শিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, শিকাগোর মতো প্রধান শহরগুলিকে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে।সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই, তৃতীয় লিঙ্গ বা রূপান্তরকামীদের স্বীকৃতি না দেওয়া, গাজা এবং ইউক্রেন নীতির বিরোধীতা করে এই বিক্ষোভে শামিল হন মানুষ। ট্রাম্প প্রশাসনের এইসব কর্মকাণ্ড ভালভাবে নেননি দেশের নাগরিকদের একাংশ। তাঁদের স্লোগানে উঠে এসেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্রাম্প নীতির বিরোধিতা। ‘অত্যাচার বন্ধের ডাক’ উঠেছে মিছিল থেকে। বিক্ষোভকারীদের কথায়, ‘কোনও ভয় নেই, আমেরিকায় অভিবাসীদের স্বাগত!’ প্ল্যাকার্ডে দেখা গেছে, ‘নো কিংশিপ’ বা ‘রাজতন্ত্রকে না বলুন’, ‘স্টপ আর্মিং ইজরায়েল’, ‘ওয়ার্কার শুড হ্যাভ দ্য পাওয়ার’, ‘রেসিস্ট টাইরেনি’ বা ‘অত্যাচার ঠেকাও’, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ এর মতো স্লোগান। এই দিনের কর্মসূচীর নাম ছিল ‘ন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন।’

আমেরিকার রাস্তায় প্যালেস্টাইনিদের সমর্থনেও আওয়াজ তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, গাজা এবং ইজরায়েলি যুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি গ্রহণযোগ্য নয়। কোনও কোনও বিক্ষোভকারীকে প্যালেস্টাইনের পতাকা ওড়াতে এবং প্যালেস্টাইনি রুমাল গলায় জড়াতে দেখা যায়। কেউ কেউ আবার বহন করেছেন ইউক্রেনের পতাকা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আরও কঠোর হতে ওয়াশিংটনকে আহ্বান জানানো হয়েছে। 

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে। ভিসা বাতিল করা হয়েছে বহু শিক্ষার্থীর। এঁদের অনেককে তাঁদের নিজের নিজের দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। এইসব শিক্ষার্থীদের অনেকেই এদিনের বিক্ষোভে অংশ নেন। 

ট্রাম্পের পাশাপাশি টেসলাকর্তা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে। ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি দক্ষতা বিভাগের দায়িত্ব দেন ইলন মাস্ককে। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের ২৩ লক্ষ কর্মচারীর মধ্যে ২ লক্ষেরও বেশি পদ শূন্য হয়ে ছে।

শনিবার আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ৭০০-র বেশি বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। শনিবারের বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল ‘৫০৫০১’ নামে একটি সংগঠন। যার অর্থ ৫০টি স্টেট , ৫০টি বিক্ষোভ এবং একটি আন্দোলন। বিক্ষোভের সময় ওয়াশিংটন মনুমেন্টের পাশে ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ঘৃণা কেনও জাতিকে মহান করে না, সবার জন্য সমান অধিকার মানে আপনার অধিকার কমে যাওয়া নয়।’