• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ভারত-চিনকে চাপে রাখতেই ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলির উপর শুল্ক বৃদ্ধির হুঙ্কার ট্রাম্পের

‘ব্রিক্‌স’কে নিশানা করে হুঙ্কার ছাড়েন, ‘ব্রিক্‌স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে কোনও দেশ যুক্ত হলে তাদের উপর বাড়তি ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে। এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না।'

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলির উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঙ্কার ছেড়েও থেমে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সত্যিই কি আমেরিকা ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলির উপর এই অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুক্ল চাপাবে, নাকি সেই পথ থেকে সরে আসছে ওয়াশিংটন? আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রিকস-এর সদস্য রাষ্ট্র ভারত ও চিনকে চাপে রাখতেই ট্রাম্পের এই হুঙ্কার। এই অতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই বলে মার্কিন প্রশাসনিক সূত্রের খবর।

‘ব্রিক্‌স’-এর আন্তর্জাতিক এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অন্যতম ভারত-চিন-রাশিয়া। এ বিষয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স আমেরিকার এক আধিকারিক সূত্র থেকে জানিয়েছে, এখনই এই শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের এখনই ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলির উপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে ‘ব্রিক্‌স’-এর কোনও সদস্য রাষ্ট্র ‘আমেরিকাবিরোধী’ নীতি গ্রহণ করলে, আমেরিকা পরবর্তী চিন্তাভাবনা করবে।

Advertisement

প্রসঙ্গত গত রবিবার এবারের ‘ব্রিক্‌স’ সম্মেলন আয়োজিত হয় ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো শহরে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বক্তৃতা দেন। ওই সম্মেলন শেষে  ৩১ পাতার একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে ‘ব্রিক্‌স’। বিবৃতিতে ১৩ জুন থেকে ইরানের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া সামরিক অভিযানের নিন্দা জানানো হয়। উঠে এসেছে শুল্কের প্রসঙ্গও। তবে সেই বিবৃতিতে আমেরিকা বা ইজরায়েলের নামের উল্লেখ না করলেও ‘ব্রিক্‌স’ বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, নির্বিচারে শুল্ক বৃদ্ধি করাই হোক বা অন্য কোনও ঘোষণা, এগুলি বিশ্ব বাণিজ্যকে আরও পিছিয়ে দেয়। ‘ব্রিক্‌স’-এর সেই যৌথ বিবৃতির পরেই সমাজমাধ্যমের একটি পোস্টে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। তিনি ‘ব্রিক্‌স’কে নিশানা করে হুঙ্কার ছাড়েন, ‘ব্রিক্‌স-এর আমেরিকাবিরোধী নীতির সঙ্গে কোনও দেশ যুক্ত হলে তাদের উপর বাড়তি ১০ শতাংশ কর চাপানো হবে। এর কোনও ব্যতিক্রম হবে না।’

Advertisement

এর পর থেকেই ‘ব্রিক্‌স’ সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা বাড়তে থাকে। আন্তর্জাতিক এই জোটের মধ্যে রয়েছে ভারত, চিন, রাশিয়া, ব্রাজ়িল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছরে ইরান, ইন্দোনেশিয়া, ইথিয়োপিয়া, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও এই জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়। ঘটনাচক্রে, সোমবার ট্রাম্প যে ১৪টি দেশকে শুল্ক-চিঠি পাঠিয়েছেন, তার মধ্যে ‘ব্রিক্‌স’-এর দু’টি দেশ— দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইন্দোনেশিয়াও রয়েছে। দু’দেশের ক্ষেত্রেই গত এপ্রিলে যে শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প, সেটিই বজায় রেখেছেন। নতুন করে কিছু যুক্ত করা হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে ৩২ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প।

যদিও এ ব্যাপারে রয়টার্স আমেরিকার ওই সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানিয়েছে, ‘একটি সীমা স্থির করা হচ্ছে। যদি আমেরিকা বিরোধী কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে তাদের উপর শুল্ক চাপানো হবে।’ অর্থাৎ, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমেরিকার ওই আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘ব্রিক্‌স’ সদস্যদের চাপে রাখার জন্যই ওই হুঙ্কার ছেড়েছেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস থেকে এখনও পর্যন্ত ‘ব্রিক্‌স’-শুল্ক সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।

Advertisement