• facebook
  • twitter
Sunday, 14 December, 2025

পাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হবে সংস্কৃত

ধর্মের ভিত্তিতে দ্বিজাতি তত্ত্ব মেনে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা হলেও দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মিল আজও অস্বীকার করা যায় না।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন উদ্যোগের কথা জানিয়েছে। সেখানে শীঘ্রই সংস্কৃত ভাষা শেখানোর পাশাপাশি মহাভারত ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠের ভাবনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের মতে, সংস্কৃত কেবল ভারতের নয়, বরং গোটা উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ, যার সঙ্গে পাকিস্তানের ইতিহাস ও সংস্কৃতিও যুক্ত। তাঁদের দাবি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা প্রাচীন জ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্য সম্পর্কে গভীর ধারণা পাবে এবং পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া আরও মজবুত হবে।

ধর্মের ভিত্তিতে দ্বিজাতি তত্ত্ব মেনে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা হলেও দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মিল আজও অস্বীকার করা যায় না। ভারতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ভাষা হিন্দি এবং পাকিস্তানের প্রধান ভাষা উর্দু— দু’টিই সংস্কৃতের অপভ্রংশ শৌরসেনী প্রাকৃত থেকে উদ্ভূত। ফলে দুই ভাষার ব্যাকরণ, বাক্যগঠন ও মূল শব্দভান্ডারে বিস্তর সাদৃশ্য রয়েছে, যা উর্দুর সঙ্গে সংস্কৃতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককেই তুলে ধরে। এই ঐতিহাসিক ও ভাষাতাত্ত্বিক বাস্তবতাকে সামনে রেখেই লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট পাকিস্তানে সংস্কৃত শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

Advertisement

সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে টানা তিন মাস ধরে সপ্তাহান্তে (উইকেন্ডে) সংস্কৃত ভাষার উপর একটি বিশেষ কোর্স চালু করা হয়েছে, যা পড়ুয়াদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্টের গুরমানি সেন্টারের ডিরেক্টর ডঃ আলি উসমান কাসমি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহাসিক যোগ রয়েছে এবং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বহু মূল্যবান সংস্কৃত নথি ও তালপাতার পুঁথি আজও সংরক্ষিত আছে। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন সেগুলি ব্যবহৃত না-হলেও এবার আগ্রহী পড়ুয়াদের জন্য সেগুলি পাঠের আওতায় আনা হবে। তাঁর মতে, এই উদ্যোগের ফলে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান বাড়বে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মানুষ যদি একে অপরের ভাষা আরও বেশি করে শেখে, তা গোটা অঞ্চলের জন্যই লাভজনক হবে— কারণ ভাষাই হতে পারে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও বোঝাপড়ার সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম।

Advertisement

এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে গীতা ও মহাভারতও পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে এই পাক বিশ্ববিদ্যালয়ের। লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্টের গুরমানি সেন্টারের ডিরেক্টর ডঃ আলি উসমান কাসমির কথায়, ‘আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে আপনারা পাকিস্তানেও গীতা এবং মহাভারত সম্পর্কে জ্ঞানী মানুষ দেখতে পাবেন।’

Advertisement