এবার ফ্রান্সে গিয়েও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হল ভারতের বহুদলীয় প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশের মাটিকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বাংলার বিজেপি নেতা তথা রাজ্য সভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানে ভারত-বিরোধী শক্তির ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে অনেকে উদ্বিগ্ন বলে এই প্রতিনিধিদল দাবি করে। মঙ্গলবার প্যারিসে বক্তৃতা কালে শমীক ভট্টাচার্য বাংলাদেশে পাকিস্তানের সামরিক তৎপরতার প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। কার্যত তিনি পাকিস্তানকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, এদিন শমীক ভট্টাচার্য বক্তৃতা দেওয়ার সময় পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কার্য্কলাপ চালানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন। শমীক তাঁদের উদ্দেশে বলতে গিয়েই পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ তোলেন। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আমাদের ২,২০০ কিলোমিটারের বেশি বহুরন্ধ্র আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে।’ সীমান্তের অনেক জায়গায় কাঁটাতার না থাকার সুযোগ নিয়ে ভারতে নাশকতা চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে শমীক ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে তাদের লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করতে। সন্ত্রাসের জন্য, সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য।’
প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়েও শমীককে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সে সব প্রশ্নের নানা রাজনৈতিক অভিমুখ ছিল। বিজেপি সাংসদ সেই প্রসঙ্গে মন্তব্য না করে এড়িয়ে যান। নিজের ভাষণে তিনি বলেন, ‘মতভেদ থাকা সত্ত্বেও আমরা ভারতের সব রাজনৈতিক শক্তি একত্রিত হয়ে এখানে এসেছি একটাই বার্তা দিতে। তা হল, পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। পাকিস্তানকে ‘‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র’’ ঘোষণা করতে হবে।’
পরে শমীক বলেন, ‘আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে আমরা এখানে আসিনি। এটা রাজনীতি করার মঞ্চ নয়। তাই আমি কিছু প্রসঙ্গে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছি।’
প্রসঙ্গত বিশ্ব সন্ত্রাসের ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতের সাফল্যের কথা আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদের যে দলটি ইউরোপে গিয়েছে, বাংলার ‘বাকপটু’ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য সেই দলের সদস্য। এই প্রতিনিধি দলটি ফ্রান্সের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে। সেই সঙ্গে প্যারিসের ভারতীয় দূতাবাসে প্রবাসী ভারতীয়দের একটি জমায়েত হয়। প্রবাসী ভারতীয়দের সেই জমায়েতে ছিলেন প্রবাসী বাঙালিরাও। তাঁদের সামনেও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন ভারতীয় প্রতিনিধিরা। সেই আলোচনায় শমীক ভট্টাচার্যের ভাষণে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে।