ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই তাঁর দল আওয়ামী লীগ কট্টরপন্থীদের রোষানলে। সেই থেকে চলছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি। প্রথমে তাতে রাজি না হলেও পরে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পথে হাঁটে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এই ঘটনায় একদিকে যেমন উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে ভারতে আশ্রয় পাওয়া বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, অন্যদিকে উদ্বিগ্ন ভারত সরকারও। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিসর সঙ্কুচিত হচ্ছে।’ সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী, বাংলাদেশ খুব তাড়াতাড়ি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’
পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংসে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন গত শনিবার মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পেছনে ইউনূস সরকারের যুক্তি, বাংলাদেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েক মাস আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগের ছাত্রশাখা বাংলাদেশ ছাত্র লীগকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে টানা তিন দিন ধরে কর্মসূচি শুরু করেছিল। গত শুক্রবার থেকে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ নামে একটি কর্মসূচিও শুরু করেছে তারা। সেই আবহেই শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসে হাসিনার দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন ইউনূস।