• facebook
  • twitter
Saturday, 19 July, 2025

২০২৫-এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রত্যাশিত: মুহাম্মদ ইউনূস

সংস্কারগুলি যদি ধীর হয় তবে ২০২৬ সালের জুনের সর্বশেষ সম্ভাব্য তারিখ পর্যন্ত ভোট বিলম্ব হতে পারে। তবে আর বিলম্ব হবে না।

ফাইল চিত্র

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ এর ডিসেম্বর থেকে ২০২৬-এর জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস এই ঘোষণা করেছেন। টোকিওতে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউনূস বলেছেন, ‘যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তখন একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং আমরা তাদের হাতে তুলে দেব।’ 

ভোট নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকরা অধৈর্য হয়ে পড়েছেন বলেও উল্লেখ করেন  ইউনূস। তিনি বলেন, ‘মানুষ তাঁদের (রাজনীতিক) বলতে চাইছে যে, নির্বাচন যখন হওয়ার, তখন হবে। কিন্তু রাজনীতিকরা ক্ষমতার আসনে বসার জন্য খুবই অধৈর্য হয়ে পড়ছেন।’ ইউনূসের এই মন্তব্য বিএনপিকে নিশানা করে হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। 

সরকারি সফরে জাপানে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ইউনূস। টোকিওয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আসে তাঁর কাছে। তখনই তিনি জবাবে জানান, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে হতে পারে।  অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে আগেই এই সময়ের কথা জানানো হয়েছিল। গত সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের পর তাঁর প্রেসসচিব শফিকুল আলম জানান, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে।

বাংলাদেশে দ্রুত সাধারণ নির্বাচন চেয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব হয়েছে বিএনপির মতো দলগুলি। দেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানও সম্প্রতি বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা। নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছিল। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আরও বলেছেন যে, ‘সংস্কারগুলি যদি ধীর হয় তবে ২০২৬ সালের জুনের সর্বশেষ সম্ভাব্য তারিখ পর্যন্ত ভোট বিলম্ব হতে পারে। তবে আর বিলম্ব হবে না। ২০২৬ সালের জুনের আগে আমাদের এটি শেষ করতে হবে।’

এদিকে একই সময়ে বিরোধী দল বিএনপি তরুণদের রাজনৈতিক অধিকার পুনরুদ্ধারের দাবিতে এবং দ্রুত নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে ঢাকায় একটি বিশাল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষোভ চলাকালীন লন্ডন থেকে একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বিএনপি-র অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি তারিক রহমান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে, ১০ মাস ক্ষমতায় থাকার পরেও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়েছে।১০ মাস পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি।  তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। আবারও আমরা বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ 

ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা এবং মানুষের মর্যাদা নিশ্চিত করবে। এর মাধ্যমে গণতন্ত্রে একটি শান্তিপূর্ণ ও কার্যকর রূপান্তর ঘটবে।’ তিনি বলেন, অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকারের মূল লক্ষ্য দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ। 

পাশাপাশি এশিয়ার পারস্পরিক নির্ভরতাকে সহযোগিতায় রূপান্তরিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন ইউনূস।  বলেন, ‘এশিয়ার অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈচিত্র্যই এর শক্তি এবং পরীক্ষা।’  তিনি বলেন, যুদ্ধের পেছনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, অথচ সেই অর্থের অভাবে কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে কিংবা ন্যূনতম মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারছে না।