অনেক নাটকীয়তা, মতবিরোধ ও প্রকাশ্য বাক্-যুদ্ধের পরে, ফের একসঙ্গে দেখা গেল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেসলার সিইও তথা মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ককে। রবিবার অ্যারিজোনার গ্লেনডেলে এক স্মরণসভায় পাশাপাশি বসে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে দেখা গিয়েছে এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিকে। স্মরণসভার আয়োজনটি করা হয়েছিল সদ্য প্রয়াত দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক নেতা চার্লি কির্কের স্মরণে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কির্কের মৃত্যুই হয়তো মাস্ক ও ট্রাম্পের পুরনো তিক্ততা ভুলিয়ে তাঁদের আবার কাছাকাছি এনে দিয়েছে। স্টেডিয়ামে দু’জনকে পাশাপাশি চেয়ারে বসে পরস্পরের মুখের দিকে তাকিয়ে কথোপকথনে মগ্ন থাকতে দেখা যায়। মাঝে একবার মাস্ক খানিকটা ঝুঁকে ট্রাম্পের দিকে এগিয়েও যান, মুহূর্তটি ধরা পড়েছে একাধিক ক্যামেরায়। তাঁদের মুখে ছিল পারস্পরিক বোঝাপড়ার ছবি।
Advertisement
ঘটনার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়, যখন হোয়াইট হাউসের এক্স হ্যান্ডলে দু’জনের একটি সাদাকালো ছবি পোস্ট করা হয়। পিছন দিক থেকে তোলা সেই ছবিতে ট্রাম্প ও মাস্ককে ঘনিষ্ঠভাবে আলাপচারিতায় লিপ্ত দেখা যাচ্ছে। ছবির ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়েছে মাত্র দু’টি শব্দ, ‘চার্লির জন্য’। একই ছবি নিজেও পোস্ট করেন মাস্ক, একই বার্তা-সহ। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মাস্ক চেয়ার থেকে ওঠার সময় ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন এবং পিঠে আলতো করে চাপড় দিচ্ছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে ট্রাম্পের হয়ে প্রচারে শামিল হয়েছিলেন মাস্ক। প্রচারের জন্য তিনি বিপুল অর্থও দান করেছিলেন। নির্বাচনের পরে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ‘ডিওজিই’ নামে একটি নতুন দপ্তর গঠন করে মাস্ককে প্রধানের দায়িত্ব দেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের নীতিগত অবস্থানের সঙ্গে একমত হতে না পারায় মাস্ক পদত্যাগ করেন। শুরু হয় পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি।
একসময় মাস্ক ঘোষণা করেন, তিনি নিজেই রাজনৈতিক মঞ্চে নামবেন। নতুন দল গঠনের ইঙ্গিতও দেন। সেই মতো কাজও করেন। সেই টানাপড়েনের মধ্যেই চার্লি কির্কের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। সম্প্রতি এক জনসভায় গুলিতে নিহত হন কির্ক। তাঁর শোকসভার সূত্রেই আবার মুখোমুখি ট্রাম্প ও মাস্ক। বিশ্লেষকদের মতে, এটি নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ, না কি ভবিষ্যতের কোনও বৃহত্তর রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত স্পষ্ট, ‘চার্লির জন্য’ হয়তো পুরনো সম্পর্কের দ্বার আবার খুলছে।
Advertisement



