• facebook
  • twitter
Monday, 16 June, 2025

কলকাতা থেকে আইপিএল ফাইনাল সত্যিই কি সরবে?

রাজনীতি আর আবহাওয়াবিদদের খেলায়

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে হঠাৎই রাজনীতি এবং আবহাওয়াবিদদের মধে লড়াই শুরু হয়ে গেল। আসলে রাজনীতি খেলার মাঠকে যেভাবে কলুষিত করছে, সেখানে এর থেকে বেশি পাওনা আর কী হতে পারে। আইপিএল ফাইনাল নিয়ে হঠাৎই আবহাওয়াবিদরা কোথা থেকে এলেন? শুধু তাই নয়, বোর্ডের কর্মকর্তারাও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন কলকাতায় নাকি আগামী ৩ জুন বৃষ্টিতে ভেসে যাবেন? সঙ্গে ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেবে শহরকে। সত্যি কি বিচিত্র এই দেশ! আসলে রাজনীতির খেলায় শেষ পর্যন্ত কলকাতা থেকে ফাইনাল খেলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে।

তবে আনুষ্ঠানিকভাবে একথা ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে কলকাতা থেকে ফাইনাল খেলা সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে সিএবি’র সামনে বিক্ষোভ দেখান ক্রিকেট ভক্তরা। তাঁরা জানতে চান, ফাইনাল খেলা নির্দিষ্ট করার পরেও কলকাতাকে কেন বঞ্চিত করা হল? আইপিএলের অলিখিত রীতি রয়েছে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন দলের ঘরের মাঠেই উদ্বোধনী এবং ফাইনাল ম্যাচ আয়োজন করার। সেই অনুযায়ী পূর্ব ক্রীড়াসূচি নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে এক সপ্তাহের জন্য আইপিএলের সমস্ত খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। নতুন সূচি প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল ফাইনাল খেলা কোথায় হবে, তার উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু তখন থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, ফাইনাল খেলা নিয়ে যাওয়া হতে পারে আহমেদাবাদে। শুক্রবার ইডেন উদ্যানের সামনে ব্যানার ও পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। আসলে দীর্ঘ ১০ বছর বাদে আবার কলকাতার ইডেন উদ্যানে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। শান্তিপূণভাবেই ক্রিকেট ভক্তরা বিক্ষোভ দেখালেও প্রতিবাদীদের পক্ষ থেকে সিএবি’র কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন এমন ঘটনা ঘটতে চলেছে?

সিএবি’র পক্ষ থেকে শোনা গেছে, ইডেন গার্ডেন্সে অল্প বৃষ্টি হলেও খেলা বন্ধ থাকে না। এখানকার সুপার সপার ও নিকাশী ব্যবস্থা যে কোনও রাজ্যের থেকে অনেক উন্নত। ইচ্ছাকৃত ও পক্ষপাতিত্বের জন্যই ইডেন ফাইনাল ম্যাচ হচ্ছে না। তবে এখনও পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের বঞ্চনা ও অবিচারেরক ব্যাপারে কোনওরকম প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। এটা মনে রাখতে হবে ক্রিকেট শুধু খেলা নয়, বাংলার একটা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সেই আবেগে আঘাত লাগলে প্রতিবাদটা স্বাভাবিক। এখন দেখার বিষয়, বিসিসিআই নতুন কোনও সিদ্ধান্তের দিকে পা বাড়ায় কিনা।

অন্যদিকে আবহাওয়াবিদরা কোনওভাবেই একমাস আগে বৃষ্টি বা ঝড়ের পূর্বাভাস দিতে পারেন না। তবে কীভাবে বৃষ্টিকে সামনে রেখে কলকাতাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, এ বিষয়ে কী ব্যাখ্যা দেবেন বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা। আগামী ৩ জুন ফাইনাল খেলা। তাহলে আগেভাগেই এই সিদ্ধান্ত বা ভাবনা কেন করা হয়েছে? পূর্বের ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী কলকাতায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ ছিল ২৩ মে। আর ফাইনাল খেলা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল ২৫ মে। সময়ের ব্যবধান কম থাকায় স্বাভাবিকভাবেই কলকাতাকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। সবার কাছেই প্রশ্ন, সত্যিই যদি ফাইনাল খেলা কলকাতা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়, তার পিছনে আবহাওয়াবিদদের তৈরি করা হয়েছে কি রাজনীতির কথা ভেবে?

বিসিসিআইয়ের অনেক কর্মকর্তা প্রকাশ্যে না বললেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন কলকাতা ফাইনালে খেলবে না। সেই কারণে ইডেন উদ্যানে দর্শকদের আগ্রহ একেবারেই থাকবে না। অর্থাৎ প্রায় গ্যালারিশূন্য মাঠে ফাইনাল খেলায় কোনও আবেগ থাকবে না। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে উদ্বোধনী ও ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। এই স্টেডিয়ামের জনপ্রিয়তা প্রকাশ করার জন্য বিসিসিআইয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছে।