• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

২১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত যানজটমুক্ত রাখার নির্দেশ

বিচারপতি রাজ্যের এজির কাছ থেকে জানতে চান, সভায় কত লোক হবে তা নিশ্চয়ই প্রশাসন জানে? রাজ্যের আইনজীবী তখন জানান, ১০ লক্ষের কাছাকাছি লোক হবে।

ফাইল চিত্র

২১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মধ্য কলকাতায় যাতে কোনও যানজটের সমস্যা না হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তা নিশ্চিত করতে বললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে হওয়া মামলার শুনানি চলাকালীন এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ওই দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত মিছিল করা যাবে। অর্থাৎ ওই সময়ের মধ্যেই কর্মী–সমর্থকদের সভাস্থলে হাজির হতে হবে। সকাল ৯টার মধ্যে যেখানে যে মিছিলই থাকুক না কেন সেখানেই তাতে রাশ (সেটল ডাউন) টানতে হবে। যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে, কলকাতা হাই কোর্ট যাওয়ার রাস্তা, মধ্য কলকাতা এবং তার আশপাশের ৫ কিলোমিটার এলাকায় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যেন কোনও যানজন না হয়। আদালত জানিয়েছে, ১১টার পর মিছিল যেমন যায়, তেমনভাবেই যাবে।

ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে রাস্তা বন্ধ করে তৃণমূল কংগ্রেসের সভা নিয়ে মামলা করেছে বাম আইনজীবী সংগঠন অল ইন্ডিয়া লয়ার্স ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি ঘোষের এজলাসে। শুক্রবারের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী শামিম আহমেদ সওয়াল করেন, ২১ জুলাইয়ের সভা বন্ধ করতে বলা হচ্ছে না। কিন্তু ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বছরের অন্য সময়ে কোনও রাজনৈতিক দলকে কর্মসূচি করতে দেওয়া হয় না। কারণ হিসেবে জানানো হয়, যানজট ও ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা। কিন্তু ২১ জুলাই তৃণমূলের সভা চলাকালীনও যানজট হয়।

Advertisement

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য দাবি করেন, যানজট হতে পারে এটা আগাম অনুমান করে নিয়ে মামলা দায়ের করা যায় না৷ প্রচারের আলোয় আসতেই এই মামলা করা হয়েছে৷ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা করা হয়েছে। ওই দিন যান নিয়ন্ত্রণের সব রকম ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুলিশ। যে রাস্তা বন্ধ থাকছে তার সমান্তরাল রাস্তা খোলা রাখা হচ্ছে। যানজট এড়াতে ৩ ঘণ্টার জন্য মালগাড়ি এবং ট্রাম চলাচল বন্ধ রাখা হবে। পাশাপাশি চালু রাখা হবে ট্র্যাফিক হেল্পলাইন নম্বর। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘যানজট হবে না এই বলে মুচলেকা দিন। কলকাতা পুলিশকে মুচলেকা দিতে বলুন।’

Advertisement

বিচারপতি রাজ্যের এজির কাছ থেকে জানতে চান, সভায় কত লোক হবে তা নিশ্চয়ই প্রশাসন জানে? রাজ্যের আইনজীবী তখন জানান, ১০ লক্ষের কাছাকাছি লোক হবে। বিচারপতি তখন তাঁকে প্রশ্ন করেন, তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা যাবে কি না? পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ওই দিন কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে তা কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জানাতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব তা–ও জানাতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ঠিকমতো পালন করা হল কি না, তা ২১ আগস্ট আদালতে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে পুলিশকে৷

শুনানি চলাকালীন বিচারপতি ঘোষ আরও জানিয়েছেন, পুজোর সময় কলকাতায় খুব ভালো যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাই ২১ জুলাইতেও কলকাতা পুলিশ এই কাজ করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। আগামী দিনে সব পক্ষকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট প্রশ্ন তোলে, রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি আর কত দিন সহ্য করতে হবে? তবে বিচারপতি ঘোষ এদিনই স্পষ্ট করে দেন, তিনি শেষ মুহূর্তে কর্মসূচি জায়গা পরিবর্তন করবেন না। কিন্তু কিছু শর্ত দেবেন। আগামী বছর থেকে শহিদ মিনার, ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড বা অন্য কোথাও এই সভা করা যায় কি না সেই নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে বলেন তিনি। এরপর শুক্রবার এই মামলায় কলকাতা পুলিশকে যানজট নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন তিনি।

Advertisement