আইপিএল ক্রিকেটের খেতাব লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়তে হল পাঞ্জাব কিংস দলকে। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। গতবারের কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের খেতাবজয়ী অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ফাইনালে জবরদস্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। শেষ পর্যন্ত ৬ রানে হারতে হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে। এমনকি বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট ঝলসে উঠতে পারেনি। সমর্থকরা অনেক আশা নিয়েই মাঠে এসেছিলেন পাঞ্জাবের জয় দেখতে। কিন্তু প্রীতি জিন্তার দল সেই আশা পূরণ করতে পারল না। একেবারে তীরে এসে হেরে যেতে হল পাঞ্জাবকে। তবে, লড়াইটা যে জবরদস্ত ছিল, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। গত বারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক এবারে সেই জায়গায় পৌঁছতে পারলেন না বলে, হতাশায় মাঠেই চোখের জল ফেলেছেন শ্রেয়স আইয়ার।
হয়তো চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি পাঞ্জাব। কিন্তু দলের মালকিনী প্রীতি জিন্টা শ্রেয়স আইয়ারের উপর ভরসা রেখেছেন আগামী বছরে দল গঠনের ভাবনায়। পাঞ্জাব দল দু’বার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েও খেতাব জয়ের লক্ষ্যে বাজিমাত করতে পারল না। তাই খেলার শেষে শ্রেয়স আইয়ার বলেছেন, আমার মনে হয়েছিল ২০০ রানের মধ্যে যখন প্রতিপক্ষ দল খেলা শেষ করেছে, তখন আমরা সেই রান টপকে যেতে পারব। আমাদের বোলাররা দুরন্ত বল করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলাম না, তা সবার মনকে আহত করেছে। সতীর্থ খেলোয়াড়দের জন্য আমি অধিনায়ক হিসেবে গর্ব অনুভব করি। এখন সামনে আরও যুদ্ধ আছে। আগামী বছর আমাদের ট্রফি জিততেই হবে, এই মনোভাব নিয়ে এখন থেকেই দল গঠনে মনোনিবেশ করতে হবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে মিনি নিলামের আসর বসবে। এরই মধ্যে পরবর্তী মরশুমের জন্য অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা সেরে ফেলেছেন মালকিন প্রীতি জিন্তা। তাই এবারের দল থেকে বেশ কয়েকজনকে যেমন ছেঁটে ফেলা হবে, তেমনই আবার সেই জায়গা ভরাট করা হবে অন্যদের দিয়ে, যাঁরা দলকে সমৃদ্ধ করবেন। তাই আতস কাঁচের নিচে যে নামগুলি ভেসে উঠেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বোলার আর্শদীপ সিং ও যুজবেন্দ্র চাহাল। ১৮ কোটি টাকা দিয়ে চাহালকে সই করিয়েছিল পাঞ্জাব। কিন্তু চাহাল সেইভাবে সেইভাবে নিজের পারফরম্যান্স তুলে ধরতে পারেননি। তিনি ১৪ ম্যাচে ১৬টি উইকেট নিয়েছেন।
আর এর মধ্যে আটটি উইকেট এসেছে দুটো ম্যাচে। আর বাকি ১২টি খেলায় আটটি উইকেট পান। স্বাভাবিকভাবে চাহালের এই পারফরম্যান্স মেনে নেওয়া যাচ্ছে না বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন কোচ রিকি পন্টিং। আর্শদীপের পারফরম্যান্সও উল্লেখযোগ্য নয়। বাদের তালিকায় নাম রয়েছে ম্যাকওয়েলেরও। ২০২০ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ছিলেন শ্রেয়স এবং কোচ ছিলেন রিকি পন্টিং। সেবারও ফাইনালে খেলার সুযোগ পেলেও দিল্লি হেরে যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে। ঠিক একইভাবে এবারে শ্রেয়স ও রিকি পন্টিং জুটি পাঞ্জাবকে ফাইনালে তুললেও খেতাব জিততে পারেনি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জেতার পরে দল যেভাবে উচ্ছ্বাসে মেতে গিয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল যেন তারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে। এটাই দলের খেলোয়াড়দের কাছে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অতি আত্মবিশ্বাসী হলে অনেক সময়ই হেরে যেতে হয়। তার জন্যই সাফল্য হাতছাড়া হয়েছে। তবে আগামী মরশুমে আরও শক্তিশালী দল গঠন করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য ঝাঁপাতে হবে।