পাঞ্জাব এফসিকে হারিয়ে আইএসএল লিগ-শিল্ড জয়ের দোরগোড়ায় মোহনবাগান

Written by SNS April 7, 2024 2:03 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি— আইএসএল ফুটবলে লিগ ও শিল্ডে চ্যাম্পিয়নে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল৷ শনিবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ১-০ গোলে পাঞ্জাব এফসি’কে হারিয়ে দিল৷ ম্যাচের জয়সূচক গোলটি করেন দলের সবচেয়ে ভরসা +ফুটবলার দিমিত্রি পেত্রাতোস৷ তবে, অসুস্থতার কারণে কোচ হাবাস না থাকলেও, ফুটবলাররা শপথ নিয়েছিলেন পাঞ্জাব জয় করে আসবেন৷ কথা রাখলেন ফুটবলাররা৷ আর এই জয় হয়তো উৎসর্গ করলেন কোচকেই সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা৷ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পাঞ্জাব দলের কোচ হিসেবে এদিন মাঠে ছিলেন বাংলার শঙ্করলাল চক্রবর্তী৷ খেলার প্রথমার্ধে মোহনবাগানের ফুটবলাররা সেইভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে পারেননি৷ তবে, তাঁদের আক্রমণ ছিল বেশ কিছুটা বেশি পাঞ্জাবের তুলনায়৷ পাঞ্জাব গোল করার মতো সুযোগ তৈরি করেও ব্যর্থ হয়েছেন৷ কিন্ত্ত সুযোগসন্ধানী পেত্রাতোসের গেলেই শেষ পর্যন্ত মোহনবাগান জয়ের হাসি হাসল৷ খেলার প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে গোলটি করেন পেত্রাতোস৷

খেলার শুরু থেকেই মোহনবাগান পাঞ্জাবকে চাপে রাখার কৌশল তৈরি করেছিল৷ কিন্ত্ত মাঝমাঠ থেকে সেইভাবে আক্রমণের উৎস তৈরি না হওয়ায় কিছুতেই গোল করার মতো সুযোগ আসেনি৷ পাঞ্জাবের ফুটবলাররা বার বার চেষ্টা করেছে মাঝমাঠেই খেলাটাকে ধরে রাখতে৷ দু’দলের ফুটবলাররা বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে সময় নষ্ট করার একটা প্রয়াস দেখা গিয়েছে৷ তারই ফাঁকে পাঞ্জাব গোল করার মতো জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল৷ খেলা তখন ১২ মিনিট গড়িয়েছে৷ তখন পাঞ্জাব গোল করার মতো একটা জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্ত্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি পাঞ্জাবের ফুটবলাররা৷ আবার মোহনবাগান ১৬ মিনিটে একটি সুযোগ হাতছাড়া করে৷ শুভাশিস বসুর দূরপাল্লার শট পাঞ্জাবের গোলরক্ষক কোনওক্রমে বাঁচিয়ে দেন৷ মোহনবাগানের আক্রমণ বেশ মন্থর হওয়ায় পাঞ্জাবের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা সেইভাবে চাপে ছিলেন না৷ পাঞ্জাবের রক্ষণভাগ বেশ দায়িত্ব নিয়েই খেলতে থাকে৷

মোহনবাগানের ফুটবলাররা সেইভাবে বল কন্ট্রোলে দক্ষতা দেখাতে পারছিলেন না৷ তারই মাঝে মোহনবাগানের দীপক টাংরি হলুদ কার্ড দেখেন৷ যার ফলে পরের ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না৷ মনবীর সিং ডানপ্রান্ত থেকে আক্রমণ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে থাকে৷ কিন্ত্ত তার আগেই পাঞ্জাবের ডিফেন্ডাররা সতর্ক থাকায় তা কাজে আসেনি৷ আশিস রাইও বল ভাসাতে পারছিলেন না পাঞ্জাবের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের জন্য৷ আবার শুভাশিস বসুর দূরপাল্লার শট পাঞ্জাবের গোলরক্ষক বাঁচিয়ে দিলেও ফিরতি বলটি চলে আসে জেসন কামিংসের কাছে৷ তিনি পেত্রাতোসকে বলটি বাড়িয়ে দেন৷ অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলার পেত্রাতোস সাজানো বলে গোল করতে ভুল করেননি৷ এগিয়ে যাওয়া মোহনবাগানের ফুটবলাররা আক্রমণে গতি বাড়াতে চেষ্টা করেন৷ ২ মিনিট বাদে সমতা ফেরাতে পারত পাঞ্জাব৷ ফ্রিকিক থেকে গোলও হয়ে গিয়েছিল, কিন্ত্ত গোলটি বাতিল হয়ে যায় লুকা মাজসেন অফসাইডে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য৷

দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগানের খেলার মধ্যে অনেক গতি দেখতে পাওয়া যায়৷ নিজেদের মধ্যে বল নিয়ন্ত্রণে রেখে বার বার আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে৷ তখন দেখা গেল পাঞ্জাবের রক্ষণভাগ মোহনবাগানের আক্রমণকে রুখে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকতে৷ তারই মাঝে পাঞ্জাবের ফুটবলার জর্ডান গিল একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন৷ নিজেই নিখুঁত হেড করে বলটি বাড়িয়ে দেন মাজসেনের কাছে৷ মাজসেন আবার ওই বলটি ব্যাকহিল করে গিলের উদ্দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন৷ সামনে একা মোহনবাগানের গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে পেয়েও গোলে বল রাখতে পারেনি৷ পরের মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসছিল আবার মোহনবাগানের৷ পাল্টা আক্রমণে মোহনবাগানের মনবীর শট নেন গোলমুখে৷ ওই শটটি পাঞ্জাবের গোলকিপার বাঁচালেও ফিরতি বলে কামিংস তা গোলে রাখতে পারেননি৷ তার আগেই অবশ্য পাঞ্জাবের একজন ডিফেন্ডার মাঠের বাইরে বলটি পাঠিয়ে দেন৷ খেলার ৬২ মিনিটে পাঞ্জাব আবার একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করে৷ গিলের শট বাঁচিয়ে দেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক৷ তবে ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট পাঞ্জাবের আক্রমণকে রুখে দেওয়ার জন্য মোহনবাগানের ডিফেন্ডারদের তৎপর হতে হয়৷ একের পর এক আক্রমণ গড়ে তুলতে থাকে পাঞ্জাব৷ তবে খেলার ৯০ মিনিটে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসো একটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন৷ এই মুহূর্তে ২০ ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ৪২ পয়েন্টে দাঁাড়িয়ে রয়েছে৷ লিগ টেবলে মোহনবাগানের স্থান দ্বিতীয়৷ শীর্ষে রয়েছে মুম্বই সিটি৷ সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে তাদের ৪৪ পয়েন্ট৷