দুবাই— কথায় বলে ফর্ম ইজ টেম্পোরারি ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট। রোহিত শর্মা বুঝতে পারছিলেন এত বড় মঞ্চ তিনি আর পাবেন না। গোটা টুর্ণামেন্টে রান পাচ্ছিলেন না। সমালোচকরা দাঁত-নখ বার করে সমালোচনা করছিলেন। অনেকেই বলতে শুরু করছিলেন রবিবাসরীয় ফাইনাল তাঁর শেষ ম্যাচ। এরপরই অবসর নেবেন তিনি। কিন্তু কথায় আছে ওস্তাদের মার শেষ রাতে, এবং এই কথাটাই আক্ষরিক ভাবে মনে করিয়ে দিলেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। রবিবাসরীয় ফাইনালের রাতে দুবাইয়ের তাঁর ৭৬ রানের ইনিংস দিয়ে আবারও এখনও তাঁর বিকল্প তৈরি হয়নি। ম্যাচের প্রথম বলে কিউই পেসারকে যখনই মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন, তখনই মনে করা হচ্ছিল, রবিবারের দিনটা তাঁরই হতে চলেছে।
তারপর গোটা জুড়ে দর্শকরা দেখল রোহিত শো। নিউজিল্যান্ড বোলারদের রীতিমত ক্লাব স্তরে নামিয়ে আনলেন ভারত অধিনায়ক। নিউজিল্যান্ডের ২৫১ রান তাড়া করতে নেমে প্রথমে রোহিতের মারকাটারি ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে কিউই বোলাররা কোনঠাসা হয়ে পড়েছিল। ৪১ বলে নিজের ৫০ রান করেন রোহিত। ৪১ বলে নিজের ৫০ রান করেন রোহিত। রোহিতের ব্যাটে সেঞ্চুরি আসতেই পারত। আর একটু ধৈর্য ধরে খেললে। ২৬.১ ওভারে রাচিন রবীন্দ্রকে স্টেপ আউট করে মারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলের লাইন মিস করেন রোহিত। ঠিক যেমন গ্রুপ লিগের ম্যাচে প্রাক্তন কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে আউট করেছিলেন অক্ষর প্যাটেল। যা গুঞ্জন চলছে, তাতে ৭৬ রানটাই কি ওডিআইতে রোহিত শর্মার শেষ ইনিংস? বলা যায় না, হতেই পারে। এমনটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের আগে রোহিত শর্মার অবসর নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। ভাবা হয়েছিল এটাই ভারত অধিনায়কের শেষ আইসিসি টুর্নামেন্ট। চ্যাম্পিয়ন হোক বা না হোক, একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করবেন রোহিত। এই আলোচনায় ছেয়ে গিয়েছিলসোশ্যাল মিডিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি রোহিত। প্রাক ফাইনাল আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন করেন শুভমন গিল। তাতে জল্পনা আরও বেড়েছে। যদিও গিল দাবি করেন, রোহিতের অবসর নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।
২০০০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছিলেন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেঞ্চুরি অবধি পৌঁছতে পারেননি রোহিত। তবে দুবাইতে হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের দ্বিতীয় ক্যাপ্টেন হিসেবে হাফসেঞ্চুরির মালিক হলেন রোহিত। তাঁর ওডিআই কেরিয়ারের ৫৮তম হাফসেঞ্চুরি এটি। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে চতুর্থ ক্যাপ্টেন হিসেবে ফাইনালে হাফসেঞ্চুরি করলেন রোহিত। এই তালিকায় তাঁর আগে রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সনৎ জয়সূর্য, হ্যান্সি ক্রোনিয়ে।