• facebook
  • twitter
Sunday, 22 June, 2025

মোহনবাগানের নির্বাচনে আড়ি-ভাব খেলায় করমর্দন

নির্বাচন কমিটির সেই অর্থে আর কোনও কাজ থাকল না। শুধু একটা নির্দিষ্ট দিনে মনোনয়ন পত্রগুলো দেখে নিয়ে বলে দেওয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এঁরা নির্বাচিত হয়েছেন।

ফাইল চিত্র

কলকাতা ফুটবল ময়দানে গটআপ কথাটার সঙ্গে সবার পরিচয় আছে। সেই গটআপ শব্দটা এবারে মোহনবাগান ক্লাবের নির্বাচনে প্রযোজ্য হয়ে গেল। শাসক গোষ্ঠী ও বিরোধী পক্ষ এক টেবিলে বসে মিলিজুলি কার্যকরী সমিতি গঠন করবার জন্যে শপথ নিয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন হচ্ছে না। লোক দেখানো নির্বাচনী সভায় ইতি টেনে দেওয়া হল। দুই পক্ষের সমর্থকরা কোমর বেঁধে যেভাবে নির্বাচনী আসরে নেমে ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই হতাশ। সবারই বক্তব্য এই ধরনের আড়ি-ভাব খেলার প্রয়োজন কী ছিল? ভোটদানের প্রয়োজন না থাকলে আগেভাগে জানিয়ে দিলে এতো ধকল বইতে হতো না।

তবে হ্যাঁ, মোহনবাগান ক্লাবের যে গরিমা ঐতিহ্য ধরে রাখার ক্ষেত্রে কার্যকরী সমিতির সদস্যদের কোনও ভূমিকা নেই। ফুটবলের দায়ভার এবং উন্নয়ন-অগ্রগতিতে প্রধান শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কারা। তাই ক্লাবের ফুটবল সচিব ও ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সচিব পদটা লোক দেখানো। অনেকটাই দপ্তর বিহীন সচিব। শুধু মঞ্চে ডাক পাওয়া। এখন প্রশ্ন হল সভাপতি, সচিব এবং দপ্তরবিহীন দুই সচিব বাদে কার্যকরী সমিতিতে থাকল অঠারোটি পদ। তাহলে বর্তমান সচিব দেবাশিস দত্ত এবং সচিব পদপ্রার্থী সৃঞ্জয় বসুর পছন্দের তালিকায় কারা জায়গা পাবেন? সহ সভাপতি পদে হয়তো দুইপক্ষ অমীমাংসিত খেলায় খেলবেন। অর্থাৎ তিন তিন ভাগ করে নেবেন। কিন্তু তারপরে অন্যান্য সচিব এবং কোষাধ্যক্ষ পদে বাছাই পর্বে কে কাকে টক্কর দেবেন। আবার সচিব পদে ফিরতে চলেছেন সৃঞ্জয় বসু আর সভাপতি পদে আসন অলংকৃত করবেন দেবাশিস দত্ত। রবিবার দফায় দফায় আলোচনায় সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট হয়নি সমঝোতায় দশ আটে না নয় নয়ে খেলা হবে।

মোহনবাগান নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষদিন সোমবার। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে বিকেল পাঁচটার পরে যৌথভাবে সচিব ও সভাপতি যৌথভাবে সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি হবেন। অন্যান্য পদগুলির ব্যাপারে রবিবার রাত পর্যন্ত অঙ্ক কষা হয়েছে।

কমন প্রার্থী হিসেবে স্বপন ব্যানার্জি ও পিন্টু বিশ্বাস নিশ্চিত। কার্যকরী সমিতিতে এবার নতুন মুখ হিসেবে এক মন্ত্রীকে দেখার সম্ভাবনা। সবচেয়ে বেশি চিন্তার মধ্যে রয়েছেন সচিব পদপ্রার্থী সৃঞ্জয় বসু। তিনি অনেককেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন কার্যকরী সমিতিতে নিয়ে আসা হবে। সেই তালিকা থেকে ষাট শতাংশ বাদ পড়ে যাবেন। তাঁদের কীভাবে সামাল দেবেন সেটাও দেখবার বিষয়। তবে বর্তমান সচিব দেবাশিস দত্ত এই ব্যাপারে হালকা চালে খেলবেন। তিনি সেইভাবে কাউকেই চিহ্নিত করেননি। হয়তো তাঁর পছন্দ মতন সদস্যদের কমিটিতে বেশি সংখ্যক আনার ব্যাপারে দাবি রাখবেন। তাঁর সম্ভাব্য তালিকায় সহ সভাপতি পদ পেতে পারেন প্রাক্তন ফুটবলার সত্যজিৎ চ্যাটার্জি। আবার সহ সচিব পদে প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্যকে দেখতে পাওয়া যেতে পারে। অন্যদের মধ্যে সোহিনী মিত্র, সন্দীপন ব্যানার্জি ও মুকুল সিনহা নামের উপরে শিলমোহর পড়ে গিয়েছে। সৃঞ্জয় বসু গোষ্ঠীর পক্ষেও দুই প্রাক্তন ফুটবলার শিশির ঘোষ, শিল্টন পাল, স্বাধীন মল্লিক, সঞ্জয় ঘোষ ও মদন দত্তরা কার্যকরী সমিতিতে আসছেন তা ধরেই নেওয়া যেতে পারে। তবে এই সমঝোতার মধ্যে দিয়ে মোহনবাগান ক্লাব থেকে সুচতুরভাবে টুটু বসুর নামটা ছেঁটে ফেলা হল।

নির্বাচন কমিটির সেই অর্থে আর কোনও কাজ থাকল না। শুধু একটা নির্দিষ্ট দিনে মনোনয়ন পত্রগুলো দেখে নিয়ে বলে দেওয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এঁরা নির্বাচিত হয়েছেন।