এখন গোটা দেশেই কান পাতলে শুধুই চারিদিকে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শোনা যাচ্ছে। অথচ ভারতে নারীকে দেবীরূপে পুজো করা হয়। বর্তমানে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া তরুণীর ধর্ষণ-খুন মামলায় বিচার চেয়ে গোটা পশ্চিমবঙ্গ পথে নেমেছে। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবে শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই এখন যেন এসব নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। গত মাসেই বাংলা, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যে লাগাতার নারী নির্যাতন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটিতেই অভিযোগ আইনি গাফিলতি নিয়ে। সেই একই কথা বলছে এনসিআরবি-র পরিসংখ্যানও।
পরিসংখ্যান বলছে, ধর্ষণের অভিযোগগুলি আইনের আওতায় গেলেও তার নিষ্পত্তিতে লেগে যায় অনেক সময়। এমনকী অপরাধের জন্য কড়া শাস্তির বিধান থাকলেও ৭০ শতাংশ অভিযুক্তই প্রমাণের অভাবে ছাড় পেয়ে যান শাস্তির হাত থেকে । পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালে গোটা দেশে ১,৯৮,২৮৫ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও তার মধ্যে মাত্র ১৮,৫১৭ টির বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বেশ কয়েক বছর পর। সাজাপ্রাপ্তের শতকরা হার ২৭.৪।
তবে নারী নির্যাতনের ঘটনায় সব রাজ্যকেই হার মানায় দিল্লির সংখ্যা, মেয়েদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধে এখনও দেশের শীর্ষে অবস্থান রাজধানীর। এর পরেই রয়েছে হরিয়ানা, রাজস্থান, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা। যদিও এ ধরনের ঘটনার নিরিখে মেয়েরা অনেক বেশি সুরক্ষিত বা কম অত্যাচারিত নাগাল্যান্ড, মিজোরামের মতো উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্যগুলিতে।
এ বিষয়ে এনসিআরবি-র তথ্য বলছে, ভারতে এদেশে ধর্ষণ বা নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যাটা রীতিমত ভয় ধরানোর মতো। তার থেকেও বেশি উদ্বেগজনক এই ধরনের মামলাগুলিতে নিস্পত্তির হার। বেশিভাগ ক্ষেত্রেই খালি হাতেই ফিরতে হয় অভিযোগকারিণীকে। শুনলে অবাক হতে হয়, তথ্যগুলি ২০২২ সালের এক পরিসংখ্যান অনুসারে গোটা ভারতে প্রতি দেড় হাজার মহিলার মধ্যে অন্তত একজন কোনও-না-কোনও অপরাধের শিকার। এক লক্ষ মহিলার মধ্যে প্রায় ৬৭ জনকে কোনও-না-কোনও অপরাধের শিকার হতে হয়েছে।