শনিবার ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গিয়েছিল দিল্লি-এনসিআরের বিস্তীর্ণ এলাকা। দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় ব্যস্ত সড়কে নেমে আসে বিপর্যয়। নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে ও ইস্টার্ন পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ের একাধিক অংশে একের পর এক গাড়ির সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। একই সঙ্গে সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগুলির বেশিরভাগ ঘটেছে কুন্ডলি-গাজিয়াবাদ-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ের এলাকায়। প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ছয় লেনের সড়ক দিয়ে হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের মধ্যে নিয়মিত প্রচুর যান চলাচল করে। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই ছিল যে, অনেক জায়গায় কয়েক মিটার দূরের গাড়িও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। সেই কারণেই চালকেরা সামনের গাড়ির দূরত্ব বুঝতে না পেরে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খান বলে পুলিশের অনুমান।
Advertisement
একটি দুর্ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা গিয়েছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে উঠে গিয়েছে। তার বনেট পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশে দাঁড়িয়ে ছিল একটি ভারী ট্রাক, আরেকটি গাড়ি ট্রাকের নীচে ঢুকে আটকে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ, টোলকর্মী ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ক্রেনের সাহায্যে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন সরানোর কাজ শুরু হয়। গৌতম বুদ্ধ নগরের পুলিশ কমিশনারের দপ্তর জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে। আহতদের সংখ্যা ও শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য এখনও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
Advertisement
এদিকে, কুয়াশা ও ধোঁয়াশার কারণে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের তরফে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে হালকা যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় পঁচাত্তর কিলোমিটার এবং ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ষাট কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে চালকদের সতর্ক হয়ে ধীরে গাড়ি চালানোর এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে।
পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে তীব্র বায়ুদূষণ। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, নয়ডা সেক্টরের একশো পঁচিশ জায়গায় দুপুর নাগাদ বাতাসের গুণমান সূচক চারশো ঊনপঞ্চাশে পৌঁছেছে, যা গুরুতর দূষণের পর্যায়ে পড়ে। দূষণ ও কুয়াশার যুগল প্রভাবেই দৃশ্যমানতা আরও কমে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
উল্লেখ্য, শীতের মরশুমে দিল্লি-এনসিআর-এর সড়কে কুয়াশাজনিত দুর্ঘটনা নতুন নয়। তবে শনিবারে একের পর এক সংঘর্ষ ফের প্রশ্ন তুলে দিল সড়ক নিরাপত্তা, চালকদের সতর্কতা এবং জরুরি ব্যবস্থাপনা নিয়ে। প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
Advertisement



