দিল্লি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবন থেকে হিসেব বহির্ভূত অর্থ মেলায় তাঁকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। দোলের রাতে বিচারপতি বর্মার দিল্লির সরকারি বাংলোয় আগুন নেভানোর সময় সেখান থেকে উদ্ধার হয় পুড়ে যাওয়া প্রচুর পরিমাণ টাকা। তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। এর জেরে বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না একটি রিপোর্ট-সহ চিঠি দিয়েছেন।
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের যে প্যানেল তৈরি হয়েছিল সেই রিপোর্টই চিঠির সঙ্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টটি গত ৩ মে তৈরি হয়। রিপোর্ট সম্পর্কে বিচারপতি বর্মার কী বক্তব্য তা-ও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি রিপোর্ট সম্পর্কে গত ৬ মে যে লিখিত বক্তব্য জানিয়েছেন, তা-ও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে অভিযুক্তকে তাঁর বক্তব্য জানানোর সুযোগ করে দেওয়া ন্যায় বিচারের আবশ্যিক একটি শর্ত, সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছে। সেই কারণেই রিপোর্ট নিয়ে বিচারপতির বর্মার বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে তিন সদস্যের যে প্যানেল তৈরি হয়েছে সেখানে রয়েছেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শীল নাগু, হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জি এস সান্ধাওয়ালিয়া এবং কর্নাটক হাইকোর্টের বিচারপতি অনু শিবরামন।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে ১৪ মার্চ, দোলের রাতে বিচারপতি বর্মার সরকারি বাংলো থেকে পুলিশ ও দমকলের কর্মীরা প্রচুর পরিমাণ পুড়ে যাওয়া টাকা উদ্ধার করেছিলেন, তা নিশ্চিত করে জানিয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। পুড়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারের ছবি সমাজ মাধ্যমে ভাইরালও হয়। বিচারপতিদের প্যানেলে বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে এবং দিল্লি পুলিশ কমিশনার, সঞ্জয় অরোরা-সহ ৫০ জনেরও বেশি লোকের বিবৃতি নিয়ে রিপোর্ট তৈরি হয়। ঘটনাটি যখন ঘটে সেই সময় যশবন্ত বর্মা দিল্লির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন।
যদিও তাঁর বাংলো থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রথম থেকেই অস্বীকার করে এসেছেন বিচারপতি বর্মা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া রিপোর্টের সঙ্গে সেই কথাও উল্লেখ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।