যৌন অপরাধে অভিযুক্ত ও পরে মৃত জেফ্রি এপস্টাইনের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া আরও বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠল আমেরিকার রাজনীতি। শুক্রবার মার্কিন কংগ্রেসের হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট নেতৃত্ব প্রায় একশোটি ছবি জনসমক্ষে আনে। সেই ছবিগুলির মধ্যে অন্তত তিনটিতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে।
ডেমোক্র্যাট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় উনিশটি ছবি প্রকাশ করা হয়। পরে আরও প্রায় আশিটি ছবি সামনে আনা হয়। সব মিলিয়ে প্রায় একশোটি ছবি প্রকাশ করে ডেমোক্র্যাট শিবির। এই ছবিগুলি এপস্টাইনের নিউ ইয়র্কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল সংখ্যক আলোকচিত্রের একটি অংশ। তদন্তকারীদের হাতে মোট ছবির সংখ্যা ছিল পঁচানব্বই হাজারেরও বেশি। তারই কিছু নির্বাচিত অংশ এবার প্রকাশ্যে এসেছে।
Advertisement
প্রকাশিত ছবিগুলির মধ্যে একটি ছবিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখা যাচ্ছে ছ’জন মহিলার সঙ্গে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে ছবি তুলতে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ছবির মাঝখানে দেখা যাচ্ছে, দু’পাশে তিন জন করে মহিলা দাঁড়িয়ে। মহিলাদের পরিচয় গোপন রাখার জন্য তাঁদের মুখ কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় একটি ছবিতে ট্রাম্পকে দেখা যাচ্ছে সাদা চুলের এক মহিলার সঙ্গে। ছবিটি কিছুটা ঝাপসা হলেও ট্রাম্পের গলায় আলগা লাল টাই এবং কোট পরা অবস্থায় তাঁকে চেনা যাচ্ছে। তৃতীয় ছবিতে ট্রাম্পকে সরাসরি এপস্টাইনের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে।
Advertisement
ডেমোক্র্যাটদের প্রকাশ করা ছবিতে শুধু ট্রাম্প নন, একাধিক প্রভাবশালী ও বিত্তবান ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিও নজরে এসেছে। সেই তালিকায় রয়েছেন ট্রাম্পের প্রাক্তন সহযোগী স্টিভ ব্যানন, ব্রিটেনের প্রাক্তন যুবরাজ অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন-উইন্ডসর, আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন এবং মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেট্স। ছবিগুলি সামনে আসতেই এপস্টাইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরের ক্ষমতাবানদের যোগাযোগ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাট নেতা রবার্ট গার্সিয়া এক বিবৃতিতে জানান, ‘এই ছবিগুলি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এপস্টাইন কী ভাবে বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হচ্ছে। যতক্ষণ না আমেরিকার জনগণের সামনে সম্পূর্ণ সত্য তুলে ধরা হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা থামব না।’ তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগকে এপস্টাইন সংক্রান্ত সমস্ত নথি প্রকাশ্যে আনতেই হবে।
ডেমোক্র্যাট শিবিরের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, যাঁরা এপস্টাইনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে, তাঁদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই ছবিগুলিতে একাধিক মুখ কালো করে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই ছবি প্রকাশ শুধু আইনি নয়, নৈতিক দিক থেকেও আমেরিকার ক্ষমতার অলিন্দে বড়সড় আলোড়ন তুলতে চলেছে।
এপস্টাইন কাণ্ডে নতুন করে ছবি প্রকাশ্যে আসায় আগামী দিনে তদন্তের গতিপথ কোন দিকে যায়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক মহল।
Advertisement



