এসসিও সম্মেলনে পুতিন-শি’র সঙ্গে সফল দ্বিপাক্ষিক আলােচনা মােদির

ধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠকে গিয়ে মােদি সম্মেলনে উপস্থিত কিছু রাষ্ট্র নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন, বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে।

Written by SNS New Delhi | June 14, 2019 12:04 pm

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Photo: IANS/PIB)

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি কিরঘিস্তানের বিশকেকে পৌঁছেছেন এসসিও’র ( সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন) শীর্ষ সম্মেলনে যােগ দিতে। আগে থেকেই ঠিক ছিল প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠকে গিয়ে মােদি সম্মেলনে উপস্থিত কিছু রাষ্ট্র নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন, বিশেষ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে।

এই শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও। তবে তাঁর সঙ্গে মােদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা আগেই উড়িয়ে দিয়েছিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। এদিন চিনের প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর মােদি একে দারুণ সফল ও উপকারী বৈঠক বলে অভিহিত করেছেন। মােদি-শি’র মধ্যে সামগ্রিকভাবে ভারত-চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেই বিষয়ে কথা হয়েছে, বিশেষ করে অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে।

গত মাসে নির্বাচনে বিশাল জয় পাওয়ার পর দুই নেতার মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক। শুরুতেই নির্বাচনে বিশাল জয় পাওয়ার জন্য শি মােদিকে অভিনন্দন জানান। ২০১৮ সালের উহান সম্মেলনের প্রসঙ্গ টেনে শি’কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৌশলী সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দু’দেশ সফলভাবে কাজ করছে। উহান সম্মেলন হয়েছিল দু’দেশের মধ্যে ৭৩ দিনের ডােকলাম সমস্যার পর। উহান সম্মেলনে দু’দেশের তিক্ত সম্পর্ক ভুলিয়ে নতুনভাবে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দু’দেশই।

এসসিও সম্মেলনকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি শুরুতেই সমস্ত দেশকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্পের একতরফা সংরক্ষণবাদী বাণিজ্যিক নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। এসসিও শীর্ষ সম্মেলন হল চিনের নেতৃত্বে ৮টি দেশের আর্থিক ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার উদ্দেশে গঠিত এক ফোরাম। ভারত ও পাকিস্তানকে এই ব্লকে শামিল করা হয়েছে ২০১৭ সালে।

গত মাসে ১২৬৭ আল কায়দা কমিটি (রাষ্ট্র সংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্বারা গঠিত) জইশ জঙ্গি নেতা আজহার মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেওয়ার প্রস্তাব এনেছিল, যাকে বারবার আটকানাে সত্ত্বেও, সেবার তাদের আপত্তি তুলে নিয়েছিল চিন। এটাকে ভারতের বড় কূটনৈতিক জয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার পিছনে ছিল চিনের অবদান। তারপর দুই রাষ্ট্রের নেতা এই প্রথমবার মিলিত হয়েছেন বিসকেকে।

এদিন প্রধানমন্ত্রী মােদি চিনের প্রেসিডেন্ট শি’কে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানালে শি সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চলতি বছরে ভারত সফরে আসবেন বলে জানা গেছে। চিন ছাড়াও নরেন্দ্র মােদি এদিন দ্বিপাক্ষিক আলােচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও। সেই বৈঠকে পুতিন সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই ভ্লাদিবস্তকে ইস্টার্ন ইকনমিক ফোরামের সম্মেলনে সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে নরেন্দ্র মােদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন মােদি।

আগামী ২৮ এবং ২৯ জুন জাপানের ওসাকায় হতে চলেছে জি-২০ সম্মেলন, সেখানে ভারত, চিন এবং রাশিয়ার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গােখলে। এদিন প্রধানমন্ত্রী মােদি পুতিনকে ভারতের আমেথিতে একটি রাইফেল তৈরির কারখানা গড়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলােচনায় পাকিস্তানের প্রসঙ্গ উঠলেও পুতিনের সঙ্গে আলােচনায় পাকিস্তানের কোনও প্রসঙ্গ ওঠেনি। সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী মােদি চিনের প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে আলােচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন আগ্রহী, কিন্তু বাতাবরণ নষ্ট করে আলােচনা ভেস্তে দিয়েছে পড়শি দেশ।