• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ভারতের এক লক্ষেরও বেশি স্কুলে একজন শিক্ষক

ভারতের এক লক্ষেরও বেশি বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র এক জন করে। এই ধরনের স্কুলগুলিতে নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা এদিকে ৩৩ লক্ষেরও বেশি।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ভারতের এক লক্ষেরও বেশি বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র এক জন করে। এই ধরনের স্কুলগুলিতে নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা এদিকে ৩৩ লক্ষেরও বেশি। এরকম স্কুল সবথেকে বেশি রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশে। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ সাম্প্রতিক ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভারতের মোট ১,০৪,১২৫টি স্কুলে মাত্র একজন করে শিক্ষক রয়েছেন। ওই স্কুলগুলির মোট পড়ুয়াসংখ্যা ৩৩,৭৬,৭৬৯ জন। এই স্কুলগুলিতে গড়ে ৩৪ জন করে ছাত্রছাত্রী পড়ছে। শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে, প্রাথমিক বিভাগে (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) প্রতি ৩০ জন পড়ুয়ার জন্য একজন করে শিক্ষক থাকা বাধ্যতামূলক। উচ্চপ্রাথমিক বিভাগের (ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি) ক্ষেত্রে প্রতি ৩৫ জন পড়ুয়ার জন্য একজন করে শিক্ষক থাকা উচিত। সেই জায়াগায় দেশের এক লক্ষেরও বেশি স্কুলে একজন করে শিক্ষক রয়েছেন।

Advertisement

এইরকম স্কুল সবথেকে বেশি রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে। এরপরেই স্থান যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের। একজন করে শিক্ষক থাকা স্কুলগুলির মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি পড়ুয়া রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশে এইরকম স্কুলের সংখ্যা ১২, ৯১২টি। উত্তরপ্রদেশে এই ধরনের স্কুল রয়েছে ৯,৫০৮টি। ঝাড়খণ্ডে এইরকম স্কুল রয়েছে ৯১৭২টি, মহারাষ্ট্রে ৮,১৫২টি এবং কর্ণাটকে রয়েছে ৭৩৪৯টি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপ এবং মধ্যপ্রদেশে এই সংখ্যা ৭,২১৭। পশ্চিমবঙ্গে এইরকম স্কুলের সংখ্যা ৬,৪৮২টি। রাজস্থানে এক জন শিক্ষক রয়েছেন এমন স্কুলের সংখ্যা ৬,১১৭টি, ছত্তিশগড়ে ৫,৯৭৩টি এবং তেলেঙ্গানায় ৫,০০১টি। উত্তরপ্রদেশে এক জন শিক্ষক নিয়ে সক্রিয় থাকা স্কুলগুলির মোট পড়ুয়াসংখ্যা ৬,২৪,৩২৭ জন।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডে পড়ুয়াসংখ্যা ৪,৩৬,৪৮০ জন। পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের স্কুলে পড়ুয়াসংখ্যা ২,৩৫,৪৯৪ জন। কেন্দ্রের তরফ থেকে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করলে জানা যাচ্ছে যে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে গড়ে ৩৬ জন করে পড়ুয়া পড়াশুনো করছে। মধ্যপ্রদেশে এই ধরনের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াসংখ্যা ২,২৯,০৯৫ জন, কর্ণাটকে পড়ুয়াসংখ্যা ২,২৩,১৪২ জন, অন্ধ্রপ্রদেশে ১,৯৭,১১৩ জন এবং রাজস্থানে ১,৭২,০৭১ জন। অন্যদিকে দিল্লিতে এইধরনের স্কুলের সংখ্যা মাত্র ৯টি। আন্দামান-নিকোবার দ্বীপপুঞ্জে এক জন শিক্ষক থাকা স্কুলের সংখ্যা মাত্র চারটি।

একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ধরনের স্কুলগুলিতে গড় ছাত্রছাত্রীসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে একদম প্রথমে রয়েছে চণ্ডীগড়। সেখানে এইধরনের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াসংখ্যা বর্তমানে ১,২২২ জন। চণ্ডীগড়ের পরেই রয়েছে দিল্লির স্থান। দিল্লিতে এক জন শিক্ষক থাকা স্কুলগুলিতে পড়ুয়া সংখ্যা ৮০৮ জন। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুসারে গত কয়েক বছরে দেশে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা কমেছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভারতে এই ধরনের স্কুলের মোট সংখ্যা ছিল ১,১৮,১৯০টি, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সেই সংখ্যা কমে হয়েছিল ১,১০,৯৭১টি এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সেই সংখ্যা আরও কমে হয়েছে ১,০৪,১২৫টি।

এই পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গিয়েছে যে, তিন থেকে এগারো বছর বয়সের পড়ুয়াদের স্কুলে নাম লেখানোর সংখ্যা ২৫ লক্ষ কমে গিয়েছে। ২০২৩-২৪ সালের ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, বুনিয়াদি ও প্রাক স্কুল প্রস্তুতিপর্বে ১২.০৯ কোটি পড়ুয়ার নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এই বছরে সেই সংখ্যা নেমে এসেছে ১১.৮৪ কোটিতে। আনুমানিক ২৪.৯৩ লক্ষ শিশু স্কুলে ভর্তিই হয়নি। প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে ভর্তির সংখ্যা কমেছে ১১ লক্ষ। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির সংখ্যা ২৪.৮ কোটি এবং তা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে নেমে এসেছে ২৪.৬৯ কোটিতে। একটি ইংরেজি সংবাদমাধ্যমকে একজন পদস্থ আধিকারিক জানান যে, এই ভর্তির সংখ্যা কমার পিছনে রয়েছে জন্মের হার কমে যাওয়া। উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মেঘালয় বাদ দিয়ে সব রাজ্যেই জন্মহার কমেছে। এর জেরেই কমেছে স্কুলে নাম নথিভুক্ত করার সংখ্যা।

Advertisement