• facebook
  • twitter
Thursday, 14 August, 2025

এবার দিল্লিতে ‘দুয়ারে আম’

মালদহ ছাড়াও হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে আম এসেছে এই মেলায়। চলতি বছরে ২ কোটি টাকা ব্যবসার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

মীনাক্ষী ভট্টাচার্য

দিল্লি, ২৪ জুন– এই সৌজন্য আগেও দেখেছে ভারতের মানুষ। এবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আম পাঠাবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারেই সৌজন্য উপহার এবং এর মধ্যে কোনওরকম রাজনীতি নেই। প্রতি বছরের মতোই এবারও মুখ্যমন্ত্রীর উপহার পৌঁছে যাবে দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর কাছে।

পাশাপাশি আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আম উপহার পৌঁছবে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপহার যাবে বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও কয়েকজন আমলার কাছেও। পশ্চিমবঙ্গের মালদহের আমের খ্যাতি জগৎজোড়া। মালদহ ছাড়াও এখন অনেক জেলায় আম উৎপাদন হয়। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তত্ত্বাবধানে দিল্লিতে ১৪ দিনের আম ও তাঁত-হস্তশিল্প মেলা শুরু হয়েছে।

বাংলার মালদহ জেলার তিন প্রজাতির আম— লক্ষ্মণভোগ, হিমসাগর ও ফজলি ইতিমধ্যে জিআই ট্যাগ পেয়েছে। আশ্বিনা প্রজাতির আমও জিআই ট্যাগ পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। রাজ্যের অর্থনীতির গতিবৃদ্ধির জন্য মালদহকে ‘ম্যাঙ্গো হাব’ ঘোষণার দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে প্রতি বছর গড়ে ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। তার মধ্যে প্রায় ৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হয় মালদহ জেলায়। মুঘল আমল থেকেই মালদহের আম প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। সেই কারণে মালদহকে ‘ম্যাঙ্গো সিটি’ হিসাবেও উল্লেখ করা হয়। এই জেলায় প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়ে থাকে। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আম চাষের সঙ্গে যুক্ত।

পশ্চিমবঙ্গের আবাসিক কমিশনার উজ্জয়িনী দত্ত জানিয়েছেন, বিগত বছরে এই মেলা থেকে রাজ্যের শিল্পীরা এবং আম ব্যবসায়ীরা প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষের টাকার ব্যবসা করেছিলেন। এই বছর আয় আরও বাড়বে। রাজ্যের তরফে রাজধানীর বুকে এই ধরনের মেলার আয়োজন মানে প্রবাসী বাঙালিদের একত্রিত করা এবং বাংলা সংস্কৃতির প্রচার করাও। এই মেলায় আগামী রবিবার কলকাতা থেকে এসে ‘নাটুয়া’ এবং ‘আন্তরিক’ গ্রুপ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে। ৬ জুলাই অনুষ্ঠান করবে পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত ‘দোহার’ এবং ‘ইচ্ছেবিতান’ দল। মেলায় মিলবে আকর্ষণীয় বাঙালি খাবারও।

মালদহ ছাড়াও হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, বাঁকুড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে আম এসেছে এই মেলায়। চলতি বছরে ২ কোটি টাকা ব্যবসার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। বাঁকুড়ায় উৎপাদন হওয়া মিয়াজাকি আমের মূল্য প্রতি কিলো ৪ হাজার টাকা। এই প্রজাতির আম মেলায় প্রদর্শন করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৪৪ হাজার কিলো আম প্রদর্শনের জন্য আনা হয়েছে। আমের সুগন্ধ এবং স্বাদ গোটা দিল্লিতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবার ‘দুয়ারে আম’-এর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ছোট একটি ট্রাক ‘আম মেলা’র বোর্ড লাগিয়ে দিল্লিতে বাঙালি এলাকায় ১৪ দিন ঘুরবে বলে খবর।