ছত্তিশগড়ের জঙ্গলে ফের নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে নিহত দুই মাওবাদী নেতা। মোস্ট ওয়ান্টেড ওই দুই নেতার মাথার দাম ধার্য করা হয়েছিল ৩৫ লক্ষ টাকা। নিরাপত্তাবাহিনী গোপন সূত্রে খবর পায়, ছত্তিশগড়ের মোহলা-মানপুর-অম্বাগড় চৌকি জেলার মদনওয়াড়া জঙ্গলে মাওবাদীরা লুকিয়ে আছে। সেই খবর পেয়েই যৌথবাহিনী বুধবার রাতে অতর্কিতে অভিযান চালায়। মৃত ওই দুই মাওবাদী নেতার নাম বিজয় রেড্ডি এবং লোকেশ সালাম। বিজয় ছিলেন মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির সদস্য। তাঁর মাথার দাম ছিল ২৫ লক্ষ টাকা। এছাড়া লোকেশও মাওবাদীদের একটি আঞ্চলিক কমিটির সদস্য। তাঁরও মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত, যৌথবাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের ফলে এখন অনেকটাই কমেছে মাওবাদীদের উৎপাত। একদা ‘রেড করিডর’ হিসেবে পরিচিত বস্তারে ক্রমশই কোণঠাসা হচ্ছে মাওবাদীরা। ছত্তিশগড় পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ছত্তিশগড়ের বস্তার ডিভিশনের সাতটি জেলায় মোট ৭৯২ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেন। এ বছর সেই সংখ্যা ছাপিয়ে যেতে চলেছে। পাশাপাশি, যৌথবাহিনীর অভিযানে সিপিআই (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু, পলিটব্যুরো সদস্য চলপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নর সিংহচলম ওরফে সুধাকরের মতো শীর্ষ নেতাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও ছত্তিশগড়ের কিছু কিছু এলাকায় মাওবাদী গতিবিধি ধরা পড়ছে।
Advertisement
জানা গিয়েছে, মদনওয়াড়ার এই জঙ্গলটি ছত্তিশগড়ের কাঁকের জেলা লাগোয়া। প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রাখার জন্য এই জঙ্গলকে ব্যবহার করে মাওবাদীরা। বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে খবর যায়, জঙ্গলের ভিতরে বেশ কয়েকজন মাওবাদী নেতা জড়ো হয়েছেন। সেই মতো যৌথবাহিনী ওই জঙ্গলে হানা দিতেই মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়ে যায়। ছত্তিশগড় পুলিশের ‘ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড’ (ডিআরজি) এবং আধাসেনা বাহিনী ‘ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ’ (আইটিবিপি) যৌথভাবে জঙ্গলে হানা দেয়। তাতে মৃত্যু হয় দুই মাওবাদী নেতা বিজয় রেড্ডি এবং লোকেশ সালামের।
Advertisement
উল্লেখ্য, বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁও-কাঁকের সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় ছিলেন একদা অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা বিজয়। এদিকে অতীতে আত্মসমর্পণ করলেও পুলিশের সন্দেহ হয়, লোকেশ গোপনে মাওবাদীদের কোটরি অঞ্চল কমিটির হয়ে কাজ করে যাচ্ছিলেন। বুধবার সূর্য অস্ত যাওয়ার পরেই ছত্তিশগড়ের জঙ্গলে মাওবাদীদের খোঁজে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। ভারী বৃষ্টি এবং মাওবাদীদের গুলিবর্ষণের ফলে যৌথবাহিনীকে অভিযানে কিছু বেগ পেতে হয়। পরে সংঘর্ষ থেমে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে খতম দুই মাওবাদী নেতার দেহ উদ্ধার করা হয়।
Advertisement



