দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে কোন খাতে সর্বোচ্চ কত খরচ করা যাবে, তার তালিকা তৈরি করে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর সেই তালিকায় আক্ষরিক অর্থেই রয়েছে ‘ফ্রম আলপিন টু এলিফ্যান্ট’— সব ধরণের ফিরিস্তি।
লোকসভা কিংবা বিধানসভা ভোট, উভয় ক্ষেত্রেই প্রার্থীদের খরচে কাটছাঁট করার চেষ্টা করে নির্বাচন কমিশন। এটি নতুন কোনও বিষয় নয়। তবে যেটি নয়া সংযোজন তা হল, প্রতিটি জিনিস ধরে ধরে খরচের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া। দেশের মধ্যে দিল্লির ভোটেই এই বিধি প্রথমবার প্রয়োগ করল নির্বাচন কমিশন। প্রার্থী পিছু ব্যয় মোট ৪০ লক্ষ টাকার সীমা যদিও বহাল রাখা হয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, দিল্লির ভোটে এই পদ্ধতিতে সাফল্য এলে, দেশের অন্য ভোটেও এই নিয়ম চালু হবে। কমিশন সূত্রের দাবি, ভোটে কালো টাকার ব্যবহার ঠেকাতেই এই ভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ধরে ধরে খরচ বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রচারে এক কাপ চায়ের জন্য সর্বাধিক ৬ টাকা এবং কফির জন্য সর্বাধিক ১২ টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। শিঙাড়া, লাড্ডু, ব্রেড পকোড়া, গুলাব জামুনের মতো খুচরো খাবারের জন্য খরচ করা যাবে সর্বাধিক ১২ টাকা। প্রতিটি কলমের খরচ কোনও ভাবেই ৬ টাকার বেশি করা যাবে না।
কোনও সভা–সমাবেশে ড্রোন ব্যবহার করতে চাইলে দিন প্রতি সর্বাধিক ৭,০০০ টাকা খরচ করা যাবে। গাঁদা ফুলের এক–একটি ছোট মালার জন্য ২০ টাকা এবং ১০ ফুটের বেশি বড় গাঁদার মালার জন্য সর্বাধিক ১,৫০০ টাকা খরচের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ দলগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২ হাজার লোকের জমায়েতের জন্য খরচ করা যাবে সর্বাধিক ৩০ হাজার টাকা। এর পর ভিড় যেমন বাড়বে, খরচ বাড়বে সমানুপাতিক হারে।
দিল্লি–দখলের লড়াই চলছে পুরোদমে। ৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভা ভোট। তবে কমিশনের এই নতুন তালিকা নিয়ে সব দলই মুখে কুলুপ এঁটেছে। আম আদমি পার্টি, বিজেপি, কংগ্রেস–সহ সব দলের নেতৃত্বের তরফেই জানানো হয়েছে এই নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হবে।
তালিকা নিয়ে কেউ কিছু না বললেও প্রার্থীদের অনেকেই একান্তে একটি কথা মেনে নিচ্ছেন। সেটা হলো, তালিকা তৈরির আগে কমিশনের প্রতিনিধিরা যে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে জিনিসের দাম রীতিমতো সরেজমিন খতিয়ে দেখেছেন, তা স্পষ্ট ।নয়তো বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন নিখুঁত তালিকা করা সম্ভব হত না।