রম্যাঁ রলাঁ
(ইতিহাস বিজ্ঞানের ডি.এস-সি, প্রফেসর, মেজর-জেনারেল ভ. মাৎসুলেনকো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ও দেশপ্রেমিক মহাযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে অনেকগুলো বই লিখেছেন। তাঁর এই বইটি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ, গতি ও ফলাফল সম্পর্কে লেখা একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এতে দলিলাদির ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে যুদ্ধের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উৎসগুলো, বর্ণিত হচ্ছে স্থল ও জলের রণাঙ্গনে সংঘটিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম আর লড়াইসমূহ। বইয়ে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। সোভিয়েত-জার্মান রণাঙ্গনের সামরিক ক্রিয়াকলাপ এবং জার্মান ফ্যাসিজম ও জাপানী সমরবাদক পরাস্তকরণে সোভিয়েত সৈন্য বাহিনী পালিত ভূমিকা।)
Advertisement
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-১৯৪৫ সাল) বেধেছিল পুঁজিতন্ত্রের সাধারণ সঙ্কটের ক্রমবর্ধমান তীব্রতার পরিস্থিতিতে এবং তা ছিল সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রসমূহের আগ্রাসী, সোভিয়েতবিরোধী নীতির পরিণাম ফল। এই যুদ্ধের কারণগুলো নিহিত ছিল সমগ্র বিশ্বকে নিজের বশীভূত করতে ও গোলাম বানাতে প্রয়াসী সাম্রাজ্যবাদের খোদ চরিত্রে। যুদ্ধটি ছিল পৃথিবীর পূনর্বণ্টনের জন্য, বিশ্ব বাজারের জন্য ও কাঁচামালের জন্য সংগ্রামে সবচেয়ে বড় পুঁজিতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বিরোধিতা বৃদ্ধির ফল। এক দিকে ছিল নাৎসি জার্মানি, ফ্যাসিস্ট ইতালি ও সমরবাদী জাপান, আর অন্য দিকে— ইংলন্ড, ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এই গ্রুপ দু’টির মধ্যে কঠোর সংগ্রাম সত্ত্বেও তাদের ঐক্যবদ্ধ করছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি, সমাজতন্ত্র নির্মাণে তার সাফল্যাদির প্রতি এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার মর্যাদা বৃদ্ধির প্রতি শ্রেণীগত বিদ্বেষ।
Advertisement
ব্রিটিশ, ফরাসি ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার এবং বিশ্ব মঞ্চে বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জার্মানিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে সর্বশক্তি দিয়ে ফ্যাসিস্ট জার্মানির আগ্রাসনমূলক আকাঙক্ষাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে চালিত করতে সচেষ্ট ছিল। তারা ভেবেছিল যে জার্মান ফ্যাসিজমের মধ্যে তারা এমন এক আক্রমণকারী শক্তিকে খুঁজে পেয়েছে যেটাকে সোভিয়েত দেশের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ব্যবহার করা যাবে। আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদের— এবং সর্বাগ্রে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের— ব্যাপক রাজনৈতিক ও প্রভূত আর্থিক সহায়তা পেয়ে জার্মান ফ্যাসিস্টরা আর জাপানী সমরবাদীরা বিশাল এক আগ্রসক সামরিক শক্তি গড়ে তোলে। তোলে। গোড়াতে জাপান কর্তৃক এই শক্তিটি ব্যবহৃত হয় চীনের বিরুদ্ধে। ১৯৩১ সালে জাপানী সৈন্যরা মাঞ্চুরিয়া দখল শুরু করে। এর অব্যবহিত পরে জার্মানি অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া আর পোলান্ড অধিকার করে নেয়।
(ক্রমশ)
Advertisement



