• facebook
  • twitter
Wednesday, 15 January, 2025

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন মনমোহন সিংয়ের

লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ শববাহী গাড়ির সঙ্গে হেঁটে আসেন শ্মশানঘাট পর্যন্ত। সারাক্ষণ গাড়ির পাশেই ছিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শববাহী গাড়ি থেকে তেরঙ্গা পতাকা মোড়া কফিন নামানো হয়। ততক্ষণে এসে পৌঁছে গেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ছবি: আই এ এন এস

অস্তাচলে মুক্ত অর্থনীতির রূপকার ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শনিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হল ভারতের রাজনীতির অন্যতম নক্ষত্রের। শনিবার সকাল থেকেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। কংগ্রেসের সদর দপ্তর থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দেহ নিয়ে আসা হয় যমুনা নদীর ধারে পূর্বনির্ধারিত নিগমবোধ ঘাটে। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সহ অন্যান্য নেতারা। মনমোহন সিংয়ের অন্তিম যাত্রায় কাঁধ দিলেন রাহুল গান্ধী। দুপুর একটা নাগাদ মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে মনমোহন সিংয়ের দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়।

তবে শুক্রবার রাত থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিলো। নিগমবোধ ঘাটে প্রয়াত মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলো কংগ্রেস। তাঁরা চাইছিলেন রাজঘাটের কাছাকাছি কোথাও শেষকৃত্য হোক, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে। কারণ যেখানে স্মৃতিসৌধ হবে সেখানে শেষকৃত্য হওয়া জরুরি। বরফ গলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে। জানানো হয়, মনমোহন সিংয়ের স্মৃতিসৌধ তৈরি করার জন্য আলাদা জায়গা দেওয়া হবে। তার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। এর পরেই নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে আপত্তি করেনি কংগ্রেস।

শনিবার সকালে কংগ্রেসের সদর দপ্তর থেকে মনমোহন সিংয়ের নশ্বর দেহ শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে আসা হয় লালকেল্লার পিছনে যমুনার তীরে নিগমবোধ ঘাটে। লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ শববাহী গাড়ির সঙ্গে হেঁটে আসেন শ্মশানঘাট পর্যন্ত। সারাক্ষণ গাড়ির পাশেই ছিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শববাহী গাড়ি থেকে তেরঙ্গা পতাকা মোড়া কফিন নামানো হয়। ততক্ষণে এসে পৌঁছে গেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুষ্পস্তবক দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। এঁরা ছাড়াও শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন, সনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ কংগ্রেসের অন্য নেতারা। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং অন্য বিজেপি নেতারাও উপস্থিত থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। মনমোহন সিংকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগেও। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে ভারতে সমস্ত দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে ভুটানের পতাকা শনিবার অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভুটান সরকার। মরিশাস সরকারও এ দেশে তাদের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলিতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দুপুর ১টা নাগাদ পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় মনমোহন সিংয়ের। সব কিছু হয়ে যাওয়ার পর মনমোহনের অস্থিকলস এসে পৌঁছয় কংগ্রেস সদর দপ্তরে। সেখানেও শ্রদ্ধা জানান বহু মানুষ।