• facebook
  • twitter
Wednesday, 26 March, 2025

বিজেপিকে রুখতে ‘ইন্ডিয়া’কে এক থাকার বার্তা মমতার

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কাটাকাটির অঙ্কে বাজিমাত করেছে বিজেপি। ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টিতেই জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির।

ফাইল চিত্র

বিজেপিকে রুখতে ইন্ডি জোটকে এক হতে হবে, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে হরিয়ানা নির্বাচনের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তাঁর দাবি, দিল্লির নির্বাচনে আম আদমি পার্টির হারের পিছনে কংগ্রেসের অনমনীয় মনোভাব অনেকাংশে দায়ী। এই নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলেনি আম আদমি পার্টি। এই কারণে আপ ও কংগ্রেস দুই দলকেই দুষেছেন মমতা। এই দুই রাজ্যের নির্বাচনে ভোট কাটাকাটিকে ইন্ডিয়ার শরিকদের হারের কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

সোমবার পরিষদীয় দলের বৈঠকে মমতা বলেন, ‘একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে থাকতে হবে সব দলকে। তা না হলে, জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে বিজেপিকে রোখা কঠিন হবে।’ ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা আর না ঘটে তা নিয়ে ইন্ডি জোটের সব শরিক দলকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভোট কাটাকাটির অঙ্কে বাজিমাত করেছে বিজেপি। ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টিতেই জয়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। ২২টিতে জিতেছে আম আদমি পার্টি। অপরদিকে কংগ্রেস একটি আসনও পায়নি। শনিবার দিল্লির নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর কোনও মন্তব্য না করলেও সোমবার পরিষদীয় দলের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি জানান, এই নির্বাচনে কংগ্রেস নমনীয় হয়ে আম আদমি পার্টির সঙ্গে জোট করলে বিজেপি জিততে পারত না। দিল্লিতে কংগ্রেসের মাত্র ৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার বিষয়টাও ভালোভাবে দেখেননি মমতা। দিল্লি বিধানসভা ভোটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আপ এবং কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটির ফলে ১৪টি আসনে জয় নিশ্চিত করেছে বিজেপি। এই ১৪টি আসনই দিল্লির ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নির্ধারক ভূমিকা নিয়েছে বলে দাবি।

লোকসভা ভোটে দিল্লিতে আপ ও কংগ্রেস একসঙ্গে লড়াই চালিয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে একাই লড়াই করার ঘোষণা করেছিলেন কেজরীওয়াল। প্রচারে নেমে একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিল আপ ও কংগ্রেস। আবগারি দুর্নীতি ইস্যুতে আপকে নিশানা করেছিল কংগ্রেস। অপরদিকে একাধিক ইস্যুতে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি আপ নেতা কর্মীরা। এর ফল ভোগ করতে হয়েছে দুই দলকেই। এমনকী আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীওয়ালও ভোট কাটাকাটির কারণেই নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে হেরেছেন। এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের সঙ্গে আপের ভোট মিলিয়ে দেওয়া হলে অন্যরকম অঙ্ক হতে পারত। এই একই কারণে দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াও হেরেছেন। জঙ্গপুরা বিধানসভা কেন্দ্রে মাত্র ৬৭৫ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি। এই আসনে কংগ্রেস পেয়েছে ৭,৩৪০ ভোট। এর মধ্যে কিছুটা অংশ মণীশের ঝুলিতে গেলে তাঁকে হারতে হত না।

অপরদিকে হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের হারের প্রসঙ্গও পরিষদীয় দলের বৈঠকে উঠে আসে। হরিয়ানার ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪৮টি পেয়েছিল বিজেপি। ৩৭টিতে জিতেছিল কংগ্রেস। কিন্তু হরিয়ানায় আম আদমি পার্টি একটিও আসন পায়নি। হরিয়ানার নির্বাচন প্রসঙ্গে কেজরীওয়ালের আপকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতায তিনি জানান, হরিয়ানায় আপ যদি কংগ্রেসের সঙ্গে থাকত তা হলে অন্যরকম ফলাফল হতে পারত। দিল্লির মতো হরিয়ানাতেই কংগ্রেস ও আপের মধ্যে সমন্বয় দেখা যায়নি।

এদিনও বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের রাজধানী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একটি আসনও না পাওয়ায় কটাক্ষ করেছেন তিনি। এই ফলাফল জোটের জন্য চরম লজ্জার বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জোটে ইন্ডিয়ার দাদাগিরি নিয়ে আগেও সরব হয়েছিলেন তিনি। এদিনও বৈঠকে ওই একই ইস্যুতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কংগ্রেসের ঔদ্ধত্য ‘ইন্ডিয়া’র শরিকরা মেনে নেবে না।