কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন হলেও সরকারি ফাইলে সই নয়, জানাল শীর্ষ আদালত 

Written by SNS May 7, 2024 5:33 pm

দিল্লি, ৭ মে – জামিন পেলেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আগামী ২০ মে, পঞ্চম দফার লোকসভা ভোট পর্যন্ত তিহার জেলেই থাকতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন মামলায় এদিন কোনও রায় দিল না সুপ্রিম কোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে দেশের শীর্ষ আদালতে।  সুপ্রিম কোর্ট আরও বলে, যদি কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর হয়, তা হলেও তিনি কোনও সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না। এদিকে আবগারি মামলায় ধৃত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন মামলায় ইডির কাছে এদিন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট বলে, কেজরিওয়াল এক জন মুখ্যমন্ত্রী। আপ প্রধানের দায়ের করা মামলা সাধারণ মামলা নয়। মঙ্গলবার শুনানিতে এই মন্তব্য করে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। বেঞ্চ ইডিকে আরও বলে, ‘‘কাউকে জীবনের অধিকার থেকে আপনি বঞ্চিত করতে পারেন না।’’ 

গত ২১ মার্চ দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। তারপর থেকেই জেলবন্দি তিনি। তাঁর গ্রেফতারিকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট চলতি মাসের শুরুতে সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হন আপ প্রধান।

বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এর আগের শুনানিতে মন্তব্য করেছিল,  ‘‘লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।’’ আদালত আরও মন্তব্য করে, গ্রেফতারির বিরুদ্ধে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের শুনানির জন্য সময় লাগতে পারে। তাই আদালত অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের কথা ভাবতে পারে। এর পর থেকেই কেজরিওয়ালের জামিন নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। মঙ্গলবারও শুনানির সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের প্রসঙ্গ ওঠে। কেজরিওয়ালের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া কেজরিওয়ালের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’ বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ জানায়,  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন শোনা হবে। কারণ কেজরিওয়াল একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি নির্বাচনে জিতেছেন। নির্বাচনে তাঁর  প্রচারের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করবে আদালত।

কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আদালতে জানায়, ফৌজদারি মামলায় ধৃত সকলের অধিকার সমান। কেজরিওয়ালকে জামিন দিলে ভুল বার্তা যাবে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে ছয় মাসের মধ্যে নয় বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি একবারও হাজিরা দেননি। সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘‘দেশে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে, আমরা তা উপেক্ষা করতে পারি না।’’ সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ‘‘আমরা কাউকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার আগে দেখি তার অপব্যবহার হবে কি না।’’ তদন্তে ‘অসহযোগিতা’র কারণেই কেজরিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আদালতে জানায় ইডি। সওয়াল জবাব চলাকালীন ইডি বলে, যদি কেজরিওয়ালকে জামিন দেওয়া হয়, তবে মানুষের ধারণা হবে তিনি কিছুই করেননি।

বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ বলে, ‘‘যদি কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়, তবে আদালত চায় না তিনি সরকারি কোনও কাজে যুক্ত থাকুন। না হলে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। আমরা সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। নির্বাচন না হলে এই জামিনের বিষয় বিবেচনা করা হত না।’’ কেজরিওয়ালের আইনজীবী আদালতে জানান, লেফটেন্যান্ট গর্ভনর না বললে কোনও সরকারি কাজ করবেন না তাঁর মক্কেল।