• facebook
  • twitter
Monday, 16 June, 2025

হায়দরাবাদে করাচি বেকারি ভাঙচুর, উঠছে নাম বদলের দাবি

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা গত শনিবার হায়দরাবাদের শামশাবদের করাচি বেকারির সামনে বিক্ষোভ দেখান।

ফের ভাঙচুর করা হল হায়দরাবাদের ‘করাচি বেকারি’। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা গত শনিবার হায়দরাবাদের শামশাবদের করাচি বেকারির সামনে বিক্ষোভ দেখান। সংস্থার নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি ভাঙচুরও করেন তাঁরা। হায়দরাবাদের আরজিআই এয়ারপোর্ট থানার ইনস্পেক্টর কে বলরাজু বলেন, ‘বেকারির কোনও কর্মচারী আহত হননি। গুরুতর কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবরও নেই।’

গত সপ্তাহেই হায়দারাবাদের বানজারা হিলসের শাখায় করাচি বেকারির নাম পরিবর্তনের দাবিতে ভাঙচুর করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। বেকারির ম্যানেজার সেই সময় বলেন, ‘আমরা ভারতীয় সংস্থা। আমাদের এ ভাবে পাকিস্তানি বলে দেগে দেওয়া যায় না।’ অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, ‘ভারতে থেকে যারা পাকিস্তানকে সমর্থন করেন, তারা দেশ ছেড়ে চলে যাক। করাচি বেকারির সঙ্গে পাকিস্তানের যোগ রয়েছে। তাই এর নাম পরিবর্তন করা উচিত। যদি তারা নাম না পরিবর্তন করে, তাহলে আমরা করব।’

এই পরিস্থিতিতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে সংস্থাটি। সেখানে তারা লেখে, ‘করাচি বেকারি ১০০ শতাংশ ভারতীয় ব্র্যান্ড। এই নাম আমাদের ইতিহাসের অংশ। এর নেপথ্যে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।’ শুধু তাই নয়, হায়দরাবাদে সংস্থাটি তাদের দোকানের প্রবেশপথে ভারতীয় পতাকাও টাঙিয়ে রেখেছে। কিন্তু তাও থামছে না বিতর্ক।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে করাচি বেকারির নাম না বদলানোর আবেদন জানান বেকারির মালিক। তিনি বলেন, ‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী এ রেবন্ত রেড্ডি এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন নাম পরিবর্তন না করেন। শহরজুড়ে বেকারির দোকানগুলিতে মানুষ তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করছে। দয়া করে আমাদের সমর্থন করুন কারণ আমরা একটি ভারতীয় ব্র্যান্ড, পাকিস্তানি ব্র্যান্ড নই।’

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাল্টা ভারতকে কূটনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে ইসলামাবাদ। গত ৬ মে ভারতের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’, যার অধীনে পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। শনিবার দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৫৩ সালে পথচলা শুরু করেছিল ‘করাচি বেকারি’। খানচাঁদ রামনানি নামে এক হিন্দু অভিবাসী হায়দরাবাদের মোজামজহি মার্কেটে এই বেকারির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি করাচি থেকে ভারতে এসেছিলেন। সেই কারণেই নাম রাখা হয় ‘করাচি বেকারি’। ধীরে ধীরে ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে শাখাপ্রশাখা বিস্তার করেছে সংস্থাটি। বর্তমানে হায়দরাবাদ ছাড়াও দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইতে করাচি বেকারির শাখা রয়েছে। শুধু হায়দরাবাদেই রয়েছে এই বেকারির ২৪টি শাখা। অতীতেও একাধিকবার হামলার সাক্ষী থেকেছে বেকারি সংস্থাটি। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে টানাপোড়ের শুরু হলেই রোষের মুখে পড়তে হয় ‘করাচি বেকারি’কে।