মহারাষ্ট্রের থানে জেলার শাহাপুর এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে চাঞ্চল্যকর ঘটনার জেরে গ্রেপ্তার করা হল স্কুলের অধ্যক্ষ সহ দুই কর্মীকে। অভিযোগ, শৌচাগারে রক্তের দাগ দেখে ছাত্রীদের ঋতুচক্র (মাসিক) চলছে কি না, তা যাচাই করতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের জোর করে জামাকাপড় খোলানো হয়। ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার সকালে ওই স্কুলের এক দারোয়ান শৌচাগারে রক্তের দাগ দেখতে পান। এরপরই স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে ডেকে পাঠানো হয় ছাত্রীদের। অভিযোগ, সেখানে ছাত্রীদের সামনে শৌচাগারে তোলা রক্তের দাগের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, কার ঋতুচক্র চলছে? যেসব ছাত্রী নিজেদের মাসিক চলছে বলে জানান, তাদের সাদা খাতায় বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের ছাপ দিতে বলা হয়। বাকিদের এক এক করে শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে জামাকাপড় খোলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গোটা তল্লাশি অভিযানে উপস্থিত ছিলেন এক শিক্ষিকাও।
Advertisement
ঘটনার পর বুধবার থেকেই ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবক এবং শিশু অধিকার সংস্থা গুলির প্রতিনিধিরা। এক অভিভাবকের কথায়, ‘মঙ্গলবার মেয়ে বাড়ি ফিরে কাঁদছিল। বলল, সহপাঠীদের সামনেই ওকে শৌচাগারে নিয়ে গিয়ে জামাকাপড় খোলানো হয়েছে। এটা কোনও স্কুলের শৃঙ্খলা হতে পারে না। এটা মানসিকভাবে হেনস্থা করা।’ ঘটনায় এক অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে থানে জেলার পুলিশ।
Advertisement
থানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাহুল জালতে বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে ইতিমধ্যেই পদ থেকে সরানো হয়েছে।’ পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের অধ্যক্ষ সহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া আরও ছ’জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। শিশুদের উপর এমন আচরণে সামাজিক ও মানসিকভাবে চরম আঘাত পৌঁছেছে বলে মত বিশিষ্টজনেদের। ঘটনাটি ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষা মহলেও। স্কুলে ছাত্রীদের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনা সামনে আসায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
Advertisement



