লখনউ, ৯ সেপ্টেম্বর— এক বছর ধরে হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। নাগালের কাছাকাছি এসেও প্রতিবার চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল বাইকচোরদের গ্যাং। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সেই চক্র। আশ্চর্যের বিষয়, চোরেদের ধরিয়ে দিল একদল পথকুকুর! তাদের তৎপরতার জেরেই উদ্ধার হল ৪০টি চুরি যাওয়া মোটরবাইক।
জানা গিয়েছে, লখনউ শহরের বিভিন্ন থানায় মাঝেমধ্যেই বাইক চুরির অভিযোগ জমা পড়ছিল। পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এর পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি বাবড়সড় গ্যাং। বহুবার চেষ্টা করেও ফাঁদে ফেলা যাচ্ছিল না তাদের। প্রতিবার শেষ মুহূর্তেই পালিয়ে যেত এই চোরেরা।
Advertisement
রবিবার কুরিয়া ঘাট থানা এলাকায় ফের একটি বাইক চুরি হয়। বাইকের মালিক হন্তদন্ত হয়ে থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক তাঁকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ধাওয়া করার পর বাইক ফেলে পালিয়ে যায় চোর। বাইক উদ্ধার হলেও হাত ফস্কে যায় দুষ্কৃতীরা।
Advertisement
পুলিশ তখনও হাল ছাড়েনি। কিছুটা এগোতেই দেখা যায়, চোরেরা একটি গাড়িতে চেপে পালানোর চেষ্টা করছে। পুলিশ খবর দেয় তাদের টিমকে। সে সময় পালিয়ে যাওয়ার জন্য চোরেদের দল একটি সরু গলিতে ঢোকে। ঠিক তখনই সেই গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে একদল পথকুকুর। গাড়ি ঘুরিয়ে অন্য গলিতে ঢোকার চেষ্টা করলে কুকুরের দলও পিছু নেয়। পালাতে পালাতে তারা ঢুকে পড়ে এমন একটি গলিতে, যার সঙ্গে মূল রাস্তার কোনও সংযোগই নেই। গলির শেষ প্রান্তে পৌঁছে দিশেহারা হয়ে যায় চোরেরা। ঠিক তখনই পৌঁছে যায় পুলিশের বিশেষ টিম। হাতেনাতে ধরা পড়ে পুরো গ্যাং।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘যদি পথকুকুররা গাড়ির পথ না আটকাত, তবে এ বারও চোরেরা পালিয়ে যেত।’ পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের আস্তানা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৪০টি চুরি যাওয়া বাইক।
চোর ধরার কাজে নিত্যদিন পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা আমরা দেখেছি। তবে লখনউয়ের ঘটনায় দেখা গেল অন্য ছবি। পুলিশের সঙ্গে সমানতালে সহযোগিতা করল শহরের পথকুকুররাই। তাদের ‘সহায়তা’র জেরেই দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের সঙ্গে চলা চোরেদের লুকোচুরির প্রাচীর ভাঙল।
Advertisement



