মেঘভাঙা বৃষ্টি-ধসে বিপর্যস্ত জম্মু-কাশ্মীর। রামবানের ধর্মকুন্ড গ্রামে সকালে হড়পা বানের জেরে বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। নিখোঁজ এক জন। পাশাপাশি বৃষ্টির জেরে বহু জায়গায় ধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়ি। চন্দ্রভাগা নদীর জলস্তর ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়েছে। ফলে নীচু এলাকাগুলি বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রামবান জেলার পুলিশ সুপার কুলবীর সিং জানিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টির জেরে বাগনা গ্রামে বাড়ি ভেঙে দুই শিশু-সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরে বৃষ্টির পূর্ভাবাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া বৃষ্টি এখনও চলছে সেখানে। শনিবার রাত থেকেই নীচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনার কাজ চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। রাতভর অপারেশনের মাধ্যমে ৫০০ জনকে সরিয়ে আনা হয়েছে। রবিবার সকালে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে। ধর্মকুন্ড গ্রামের একটি খালের জল বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছোয়। আচমকাই হড়পা বানের সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রচুর বাড়ি ভেঙে পড়ে। রামবান শহরের প্রান্তে অবস্থিত সেরি চম্পা গ্রামে বাড়ি ভেঙে চাপা পড়ে যান তিন জন। তাঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রামবানে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে ১০টি বাড়ি। আরও ২৫ থেকে ৩০টি বাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুটি হোটেল, বহু দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯০-১০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদের উদ্ধারের কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বৃষ্টি কমলে তবেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, দুর্যোগের জেরে জম্মু-কাশ্মীরে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। রামবান শহরে শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া চলছে। বহু জায়গায় ধস নামায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। ধস নেমে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। হড়পা বানে রামবানে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
হড়পা বানের জেরে মৃত্যুর খবরে দুঃখপ্রকাশ করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসন গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে। উদ্ধারকাজ চলছে, যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসন নিয়ে রবিবারই বৈঠকে বসে প্রশাসন। স্থানীয় মানুষকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে, নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া তাঁরা যেন ধসপ্রবণ অঞ্চলে না যান। কোনও সমস্যা হলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।