দিল্লির অক্ষরধাম মন্দিরে এক ভুয়ো পুরোহিত এবং তাঁর সঙ্গীর পাতা ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হলেন এক যুবক। সমাজমাধ্যমে নিজের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, কী ভাবে মুহূর্তের মধ্যেই লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিল দু’জন প্রতারক।
প্রতারিত যুবকের কথায়, প্রথম বার অক্ষরধাম দর্শনে যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে বাসে আলাপ হয় এক প্রৌঢ়ের। ওই প্রৌঢ় নিজে থেকেই কথাবার্তা শুরু করে নানা ভাবে তাঁর বিশ্বাস অর্জন করেন। যুবক জানিয়েছেন, প্রৌঢ় বার বার বলেন যে, তিনি অক্ষরধামে বহু বার গিয়েছেন, সর্বত্র তাঁর পরিচিতি আছে, আলাদা করে গাইড নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। তিনিই মন্দির দেখিয়ে দেবেন।
Advertisement
প্রৌঢ়ের কথায় ভরসা করে যুবক তাঁর সঙ্গে অক্ষরধামে যান। অভিযোগ, মন্দিরে প্রবেশের আগে প্রৌঢ় তাঁকে বলেন, লকার রুমে ফোন, টাকা বা বেল্টের মতো দামি জিনিস রাখা বিপদজনক। সেখান থেকে নাকি চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে! এর বদলে মন্দিরেই তাঁর চেনা এক ‘পুরোহিত’-এর কাছে জিনিসপত্র নিরাপদে রেখে যাওয়া যায়। প্রথমে যুবকের মনে সন্দেহ থাকলেও মন্দিরের সামনে ওই ‘পুরোহিত’-কে দেখে সংশয় কেটে যায়। প্রৌঢ় নিজেও নিজের মোবাইল এবং টাকার ব্যাগ ওই ব্যক্তির কাছে জমা রাখেন। তা দেখে যুবক আরও আশ্বস্ত হন এবং তিনিও তাঁর টাকা, মোবাইল, স্মার্টওয়াচ, বেল্ট-সহ সব মূল্যবান জিনিস ওই ‘পুরোহিত’-এর কাছে জমা রেখে মন্দিরে প্রবেশ করেন।
Advertisement
মন্দিরে ঘোরার সময় প্রৌঢ় যুবকের সঙ্গেই ছিলেন। কী দেখতে হবে, কোথায় যেতে হবে— সবই তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। শেষ দিকে তিনি জানান, প্রসাদ আনতে যাচ্ছেন। আর তারপরই তিনি অদৃশ্য হয়ে যান। এদিকে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করেও প্রৌঢ়ের দেখা না মেলায় যুবকের সন্দেহ বাড়ে। মন্দির থেকে বেরিয়ে দ্রুত ওই ‘পুরোহিত’-এর খোঁজ করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় পুরোহিত থেকে দোকানদার— কেউই ওই দুই ব্যক্তিকে চিনতেন না।
শেষ পর্যন্ত যুবক বুঝতে পারেন, বাসে আলাপ হওয়া প্রৌঢ় এবং তথাকথিত পুরোহিত— দু’জনেই আসলে প্রতারক। তাঁদের ছকবদ্ধ পরিকল্পনার জালেই তিনি পড়েছেন এবং লোপাট হয়েছে তাঁর সব মূল্যবান জিনিস।
Advertisement



