জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করবেন না, তুর্কি প্রেসিডেন্টকে কড়া বার্তা

জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান বিরােধী মনােভাব প্রকাশ করে এসেছে- ভারতও পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে।

Written by SNS New Delhi | February 16, 2020 1:41 pm

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেসাপ তায়িপ এরদোগান ও পাক প্রধানমন্ত্রী (Photo: AFP)

জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান বিরােধী মনােভাব প্রকাশ করে এসেছে- ভারতও পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে। কিন্তু পাকিস্তান সফরে আসা তুর্কি প্রেসিডেন্টের কাশ্মীর ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করা নিয়ে কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে প্রেসিডেন্ট এরডােগানকে কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, কাশ্মীর ইস্যুতে নাক গলাবেন না, ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপার।

ভারতের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে পাক পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট এরডােগান কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করার কথা বলেন। পাশাপাশি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থান নিয়ে কড়া সমালােচনা করেন।

পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে এরডােগানের বৈঠকে ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে আলােচনা হওয়ায় বিদেশমন্ত্রক রীতিমতাে ক্ষোভ প্রকাশ করে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেছেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার জন্য একাধিকবার তুর্কি প্রেসিডেন্টকে বলা হয়েছিল। কেননা, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই সিদ্ধান্ত পুরােটাই অভ্যন্তরীন।’

তুর্কি ও পাক কর্তৃপক্ষের যৌথ বিবৃতির কড়া জবাব দিয়ে ভারতের তরফে বলা হয়েছে, ‘জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কে পাক কর্তৃপক্ষ ও তুর্কি কর্তৃপক্ষ যে সমস্ত বিবৃতি দিয়েছে, পুরােটা খারিজ করা হল। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ও পুরােটাই অভ্যন্তরীন বিষয়। পাক পার্লামেন্টে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট যা বলেছেন, আমরা নস্যাৎ করছি। তুর্কি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তারা কোনওভাবে যেন ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে নাক না গলায়। পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ শুধু ভারতে নয়, অন্যান্য দেশেও প্রভাব পড়ছে। সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকার অনুরােধ জানাচ্ছি।’

পাক সফরে গিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে প্রেসিডেন্ট এরডােগান বলেন, ‘কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের যে কোনও ধরনের অবস্থানকে তুর্কি সবসময় সমর্থন করবে।’

ভারতের নিষেধ সত্ত্বেও ফের একবার জম্মু কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসাপ তায়িপ এরদোগান। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। আর তারপরেই ফের একবার এরদোগানকে সতর্ক করল নয়া দিল্লি। তুরস্ককে এই বিষয়ে নাক না গলানাের পরামর্শ দিয়েছে ভারত।

পাকিস্তান সফরে গিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। সেখানে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের খানের সঙ্গে বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে এই মন্তব্য করেন এরদোগান। শুক্রবার ইমরানকে পাশে নিয়ে এরদোগান বলেন, আমাদের কাশ্মীরি ভাই-বােনেরা দশকের পর দশক ধরে কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সিদ্ধান্ত তাঁদের এই কষ্ট আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। পাকিস্তান বরাবর কাশ্মীরের মানুষের পাশে থেকেছে। কিন্তু পাকিস্তানিদের কাশ্মীর নিয়ে যতটা চিন্তা ঠিক ততটাই চিন্তা আমাদেরও। তাই এই সময় এমন একটা সমাধানের প্রয়ােজন, যা সবার জন্য ভাল হয় ও শান্তি বজায় থাকে। তুরস্ক বরাবর শান্তি চেয়ে এসেছে। আমরা পাকিস্তানের পাশে রয়েছি।

এরদোগানের এই মন্তব্যের পরে ভারতের তরফে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সব দাবিকে খারিজ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তান ও তুরস্কের তরফে যৌথভাবে কাশ্মীরকে নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কাশ্মীর বরাবরই ভারতের অংশ।

বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেছেন, আমরা তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে বলছি জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে নাক না গলাতে। কারণ এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা ভারত নেবে। তাই এসব না ভেবে আগে দেখুন কী ভাবে প্রতিনিয়ত পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে জঙ্গি পাঠানাে হয়। কী ভাবে ভারতে সন্ত্রাস চালানাের চেষ্টা করে পাকিস্তান। তারপরেই কোনও মন্তব্য করা উচিত তুরস্কের প্রেসিডেন্টের।

তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করেছেন এরদোগান। গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বৈঠকে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলে এনেছিলেন তিনি। তখনও ভারতের তরফে এরদোগানকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল এই বিষয়ে তাঁর মাথা না ঘামালেও চলবে। কিন্তু তারপরেও ফের একই ধরনের মন্তব্য করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।