২৫ মে বড় ছেলে তেজপ্রতাপকে দল এবং পরিবার থেকে বিতাড়িত করেছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বন্ধ হল বলে মন্তব্য করেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর থেকে চুপচাপই ছিলেন তেজপ্রতাপ। অবশেষে রবিবার তিনি সোশাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন। লালু-রাবড়িকে ‘পৃথিবী’ সম্বোধন করে বার্তা দিয়েছেন তেজ। ভাই তেজস্বীকে নাম না করে কটাক্ষ করেছেন লালুর বড় ছেলে।
রবিবার সমাজমাধ্যমে পর পর দু’টি পোস্ট করেন তেজপ্রতাপ। প্রথম পোস্টে তিনি জানান, লালুর ‘আদেশ’ মেনে নিচ্ছেন! তবে দ্বিতীয় পোস্টে দলেরই কিছু নেতার দিকে আঙুল তুলেছেন তেজ। এক্স হ্যান্ডলে তেজপ্রতাপ লিখেছেন, ‘আমার প্রিয় মা এবং বাবা…। আমার পুরো পৃথিবীটা শুধু তোমাদের দু’জনকে নিয়ে। তুমি এবং তোমার দেওয়া যে কোনও আদেশ ঈশ্বরের চেয়েও মহান। তুমি যদি থাকো, তাহলে আমার সবকিছু আছে। আমার শুধু তোমার বিশ্বাস আর ভালোবাসা দরকার, আর কিছু না। বাবা, তুমি যদি না থাকতে তাহলে এই দলটা থাকত না এবং জয়চাঁদের মতো কিছু লোভী মানুষও থাকত না, যাঁরা আমার সঙ্গে রাজনীতি করে। শুধু মা আর বাবা, তোমরা দু’জনেই সবসময় সুস্থ ও সুখী থাকো।’
তেজপ্রতাপ বিতর্কের সূত্রপাত ২৪ মে। ওই শনিবার তেজপ্রতাপের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছিল, তিনি ১২ বছর ধরে এক যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। প্রোফাইলে ‘ইন এ রিলেশনশিপ’ স্টেটাস দেওয়া হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। এরপর তেজপ্রতাপ দাবি করেন, তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করা হয়েছিল।
একটা সময় ভাই তেজস্বীর সঙ্গে আরজেডির ‘দখল’ নিয়ে দ্বন্দ্বও ছিল তেজপ্রতাপের। পরে অবশ্য লালুর দলের দায়িত্ব ছোট ছেলে তেজস্বীর হাতে তুলে দেন। দীর্ঘদিন ধরেই আরজেডির মূল সংগঠন থেকে দূরে রয়েছেন তেজপ্রতাপ। কখনও তাঁকে নাটকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে, কখনও সিনেমায় হাত পাকানোর চেষ্টা করেছেন, তবে সমান্তরালভাবে রাজনীতিটাও চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এরপর ২৫ মে, রবিবার বড় ছেলে তেজপ্রতাপকে আরজেডি থেকে বহিষ্কার করেন লালুপ্রসাদ যাদব। দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় তাঁকে।
সেদিন এক্স হ্যান্ডলে লালু লেখেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক মূল্যবোধকে অবহেলা করা সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের সম্মিলিত সংগ্রামকে দুর্বল করে দেয়। বড় ছেলের কার্যকলাপ, জনসাধারণের আচরণ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অতএব, উপরোক্ত পরিস্থিতির কারণে, আমি তাঁকে দল এবং পরিবার থেকে দূরে রাখছি। এখন থেকে দল এবং পরিবারে তাঁর কোনও ভূমিকা থাকবে না। তাঁকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’
দাদা তেজপ্রতাপকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় তেজস্বী যাদব বলেছিলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে, আমি এই সব পছন্দ করি না এবং সহ্যও করি না। আমি আমার কাজ করছি। বড় ভাইয়ের ব্যক্তিগত জীবন আলাদা। ওর নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। লালুজি টুইট করে তাঁর অনুভূতি স্পষ্ট করেছেন। আমি এই সব পছন্দ করি না। আমি মিডিয়া থেকেই এই সিদ্ধান্তে কথা জানতে পেরেছি।’