সরকারি বাসভবন থেকে উদ্ধার হল কেন্দ্রীয় আবগারি ও জিএসটি বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার, তাঁর মা এবং বোনের দেহ। পাশাপাশি দুটি ঘরে ঝুলতে দেখা যায় দাদা ও বোনের দেহ। অন্য একটি ঘরে পড়েছিল তাঁদের মায়ের নিথর দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের কোচিতে। এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি আত্মহত্যার ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মণীশ বিজয় ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তিনি জিএসটি বিভাগে কাজ করতেন। বোন শালিনী ও মা শকুন্তলা দেবীকে নিয়ে থাকতেন কেরলে। জানা গিয়েছে, চারদিন আগে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন মণীশ। তবে ছুটি শেষ হয়ে গেলেও অফিসে না যাওয়ায় তাঁকে ফোন করেন সহকর্মীরা। মণীশকে ফোনে না পেয়ে সরকারি বাসভবনে আসেন সহকর্মীরা। বাড়ির কাছে পৌঁছতেই পচা গন্ধ পান তাঁরা। ঘরের খোলা জানলা থেকে উঁকি দিতেই সিলিং থেকে একটি দেহ ঝুলতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই দুটি আলাদা ঘর থেকে সরকারি আধিকারিক ও তাঁর বোনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অন্য আর একটি ঘর থেকে শকুন্তলাদেবীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বৃদ্ধা মহিলার দেহ সাদা কাপড়ে মোড়া ছিল, বিছানার উপর ছিল ফুল। সন্দেহ করা হচ্ছে মা শকুন্তলা দেবী প্রথমে মারা যান অথবা প্রথমে তাঁকে হত্যা করা হয়, পরে ভাই-বোন আত্মহত্যা করেন। একটি ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে চিঠিও। সেখানে লেখা, ‘দিদিকে খবরটা পারলে জানিয়ে দেবেন।’ জানা গিয়েছে, মণীশের এক দিদি বিদেশে থাকেন।
কোচির পুলিশ কমিশনার পুট্টা বিমলাদিত্য সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, মৃতদেহগুলি কয়েক দিনের পুরনো, এবং সেগুলিতে পচন ধরতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষার পরই বলা সম্ভব হবে যে তাঁরা কখন মারা গিয়েছেন।
জানা যাচ্ছে, শালিনী ২০০৬ সালে ঝাড়খণ্ড পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে প্রথম হন। ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে নিযুক্তও হন। তবে তাঁর পদমর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তাঁকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ২০২৪ সালে মামলার সিবিআই তদন্তের ফলে চার্জশীট জমা দেওয়া হয়েছিল এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে যায়।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, পরিবারের সদস্যরা কি একই সঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছেন? না কি তাঁদের সকলকে খুন করা হয় ? না কি মা ও বোনকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হন সরকারি আধিকারিক ? এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।