• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

নওগাম থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত বেড়ে ৯ 

পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই পুলিশ সদস্য এবং ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিক। জখম হয়েছেন অন্তত ২৯ জন।

জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের নওগাম থানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯। শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশ স্টেশনের ভেতরেই বাজেয়াপ্ত করা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই পুলিশ সদস্য এবং ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিক। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন অন্তত ৩৩ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নওগাম থানার ১৫ কিলোমিটার দূর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। বিস্ফোরণের অভিঘাতে থানা থেকে মৃতদেহ এবং দেহাংশ ছিটকে গিয়েছে দূরে। ৩০০ মিটার দূর থেকেও নিহত পুলিশকর্মীদের দেহাংশ মিলেছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে কিছু দেহাংশ চাপা পড়েছিল। দেহ উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের। পুলিশ সূত্রে খবর, ২৭ জন পুলিশকর্মী, তিনজন সাধারণ বাসিন্দা সহ মোট ৩৩ জন জখম হয়েছেন।

Advertisement

শুক্রবার রাতের বিস্ফোরণে আহতদের শ্রীনগরের ৯২ বেস মিলিটারি হাসপাতাল এবং শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের পর রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। আশপাশের এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে এবং কেন এমন বিস্ফোরণ ঘটল, তা জানতে তদন্তকারী সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।

Advertisement

এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিজিপি) নলিন প্রভাত বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘ফরিদাবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক এবং কেমিক্যালের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছিল যাবতীয় সতর্কতা অবলম্বন করে। সেই সময়েই এই বিস্ফোরণ ঘটে।’ এই ঘটনা নিয়ে অন্য সমস্ত জল্পনা ভুয়ো বলে জানিয়েছেন ডিজি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নয় জনের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টা ২০মিনিট নাগাদ দক্ষিণ শ্রীনগরে নওগাম থানার মধ্যেই ওই শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। নওগাম থানার কমপ্লেক্সের মধ্যে এই বিস্ফোরণের জেরে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সমাজমাধ্যমে সঙ্গে সঙ্গেই ছড়িয়ে পড়ে এই বিস্ফোরণের ছবি। বিস্ফোরণের জেরে বেশ কয়েকটি গাড়ি আগুনে পুড়ে গিয়েছে। থানার ভবনের কিছু অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কয়েকদিন আগেই হরিয়ানার ফরিদাবাদ এবং উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। উদ্ধার হওয়া দ্রব্যের মধ্যে ছিল বোমা তৈরির রাসায়নিক, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সহ অস্ত্রশস্ত্রও। ফরিদাবাদ থেকেই ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। সেগুলি পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল শ্রীনগরের নওগাম থানায়।

অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও অন্যান্য বিস্ফোরক নমুনা পরীক্ষা করতে শুক্রবার রাতে থানায় উপস্থিত ছিলেন ফরেন্সিক দলের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ-অধিকারিক। ঠিক কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, পরীক্ষার সময় কোনও ধরনের ভুল বা অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, নওগামে থাকা বিস্ফোরকই দিল্লির লালকেল্লার সামনে হওয়া বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। উল্লেখ্য, দিল্লি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িটি ফরিদাবাদ থেকেই এসেছিল। সেই সূত্রেই উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বড়সড় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার হয় বিস্ফোরকগুলি। দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে জইশ-ই-মহম্মদের যোগ প্রথম খুঁজে পায় নওগাম থানার পুলিশই। শ্রীনগরের রাস্তায় এক চিকিৎসককে জইশ সমর্থনে পোস্টার লাগাতে দেখা যায়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

Advertisement