দেশে ১৭০’টি জেলা করোনা সংক্রমণে হটস্পট

দেশে ১৭০’টি জেলাকে করোনা সংক্রমণে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ২০৭’টি জেলা একেবারেই করোনা সংক্রমণ মুক্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

Written by SNS New Delhi | April 16, 2020 5:42 pm

দেশজুড়ে লকডাউন (File Photo: IANS)

দেশে ১৭০’টি জেলাকে করোনা সংক্রমণে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ২০৭’টি জেলা একেবারেই করোনা সংক্রমণ মুক্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ইতিমধ্যে দেশে সংক্রমণের সংখ্যা এগারো হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য তেরোশো মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ভারতে লাগাতার ২২ দিন লকডাউন চলছে। বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষে জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলাকে হটস্পট, নন হটস্পট ও সবুজ জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৭০’টি জেলাকে হটস্পট ও ২০৭ জেলাকে নন হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, বিগত চব্বিশ ঘন্টায় এগারোশো তিয়াত্তর সংক্রমণের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। ফলে মোট সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এগারো হাজার পাঁচশো। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার জনকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭৭। যুগ্ম সচিব জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত হচ্ছেন প্রায় বারো শতাংশ।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে। এর মধ্যে কৃষি, ই-কমার্স এবং নির্দিষ্ট শিল্প ক্ষেত্রে ২০ এপ্রিল থেকে ছাড় দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। এছাড়া, সকল স্বাস্থ্য পরিষেবা, আর্থিক পরিষেবা, এমএনআরইজিএ কাজ, সাধারণের ব্যবহারের পরিষেবা, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ ইত্যাদির ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীদের কঠোর ব্যবস্থার মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মন্ত্রকের পক্ষে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার লকডাউনের মেয়াদ ১৯ দিন বৃদ্ধি করে ৩ মে পর্যন্ত ঘোষণা করেছেন। ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন চলাকালীন দেশে বন্ধ থাকছে ট্রেন, বাস, বিমান পরিষেবা। বন্ধ রাখা হচ্ছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে সাধারণের অসুবিধা কিছু দুর করতে আগামী ২০ এপ্রিলের পর কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, ই-কমার্স এবং আন্তঃরাজ্য পবিহণ ব্যবস্থায় ছাড় দেওয়া হবে।

নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় যে সকল কলকারখানা রয়েছে বা সেখানে অবস্থিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, সড়ক নির্মাণ, কৃষি প্রকল্প, নির্মাণ ও শিল্প প্রকল্প, এমএনআরইজিএ আওতায় কাজ, জল সংরক্ষণের কাজ এবং সাধারণ পরিষেবা প্রদান কেন্দ্রগুলি সচল রাখা হবে। তবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি কঠোরভাবে পালন করতে হবে। লকডাউনের সময়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে ছাড় দেওয়ার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুবিধা হবে।

২০ এপ্রিল থেকে আন্তঃরাজ্য পণ্য পরিবহণকারী লরির যাতায়াতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। অপরিহার্য ও তুলনামূলকভাবে কম প্রয়োজনীয় এই দুই ধরনের পণ্য পরিবহণে ওই ছাড় মিলবে। পণ্য সামগ্রি নিয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার সময় কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ দ্রুত মেরামত করা যায় তার ওপরও নজর রাখা হবে। ফলে ট্রাক মেরামতকারী দোকানগুলিও খোলা রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে।

এছাড়া, রাস্তার ধারের ধাবাগুলিও ২০ এপ্রিল থেকে খোলা রাখা যাবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। যে সকল কলসেন্টারে সরকারি কাজ হয় সেগুলি আগামী সোমবার থেকে খোলা থাকছে। ওষুধ ও মেডিক্যাল সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা, প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনকারী ইউনিট, আইটি হার্ডওয়্যার এবং প্যাকেজিং কারখানাগুলিও খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কয়লা উৎপাদন, তেল ও খনিজ দ্রব্য প্রস্তুতকারী ইউনিটগুলিও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দুগ্ধ সরবরাহ, দুগ্ধজাত সামগ্রি, পোলট্রি এবং পশুপালনেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। চা, কফি এবং রাবার প্ল্যান্টগুলিও খোলা হবে। তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা চালু করার পাশাপাশি অনলাইনে শিক্ষাদান এবং তার মাধ্যমে দূরশিক্ষার বিষয়টিও পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।