এসএসসি নিয়োগ মামলাকে ঘিরে তাঁর এজলাসেই আলোড়নের সূত্রপাত হয়েছিল। মঙ্গলবার তাই তাঁর কাছেই আইনি পরামর্শের জন্য যান চাকরিহারাদের একাংশ। মঙ্গলবার বিকেলে চাকরিহারাদের সঙ্গে নিয়ে এসএসসি-র দপ্তরে ছুটে যান বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীও। যদিও এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা হয়নি। ফলে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাঁদের। তবে আজ ফের এসএসসি-র দপ্তরে যাবেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। তাঁর দাবি, এখনও যোগ্য–অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব। রাজ্যের সহযোগিতা মিললেই এটি সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি কাণ্ডে আইনি পরামর্শ নিতে মঙ্গলবার প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। একজন দক্ষ আইনজীবীর অভাব বোধ করায় আইনি পরামর্শ নিতে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিতের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এদিন আলাপ আলোচনার পর অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, চাকরিহারাদের নিয়ে এসএসসি অভিযানে যাচ্ছেন তিনি।এরপরই তড়িঘড়ি এসএসসি-র দপ্তরে ছুটে যান। যদিও তাঁর সেই যাওয়া বৃথা হয়, কারণ তখন এসএসসি-র দপ্তরের ছিলেন না চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। ফলে গোটা পরিকল্পনাই বানচাল হয়ে যায়। তবে হাল ছাড়েননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবিদাওয়া জানিয়েছি। ওখানে থাকা পুলিশ অফিসারকেও জানিয়েছি যে আমরা বুধবার আবার আসব। আমাদের দাবি, ওএমআর-এর মিরর ইমেজ প্রকাশ্যে আনা হোক। যাঁরা তা প্রকাশ্যে আনতে দিচ্ছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক।’
এরপরই শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। প্রাক্তন বিচারপতির এই অত্যুৎসাহের পাল্টা খোঁচা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, ‘উনি বিচারপতি থাকাকালীন রাজনৈতিক নেতাদের মতো কথা বলতেন। আর এখন সাংসদ হয়ে বিচারপতির মতো কথা বলছেন। শুনেছিলাম এক সময় নাকি উনি অভিনেতা হতে চাইতেন! উনি হয়তো জানেনই না কোন সময় কোন পার্ট করতে হয়। উনি কি সেটা জানেন ? প্রকৃত অভিনেতার বোঝা উচিত কোনটা কার কাজ।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারাদের আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু এখন তাকেই ইস্যু করে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার চাকরিহারাদের সঙ্গে কথা বলার পরই সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিজেপির সাংসদের বক্তব্য, ‘যোগ্যদের চাকরি বাঁচানোর দায় মুখ্যমন্ত্রীরই। তাঁর জন্যই যোগ্য–অযোগ্য বাছাই করা যাচ্ছে না। এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের হাত-পা বেঁধে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ্যে আনতে দেওয়া হচ্ছে না রাজনৈতিক কারণেই।’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘ এসএসসি যোগ্য–অযোগ্যর তালিকা প্রকাশ করলে চাকরি ফিরে পেতে পারেন যোগ্যরা। ২০১৬ সালের এসএসসি’তে অংশগ্রহণকারী সমস্ত পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট ওয়েবসাইটে আপলোড করলেও হবে।’ একটা কম্পিউটরাইজড মেথড তো রয়েছে, যেখান থেকে ম্যাচ করালে বোঝা যাবে, কতজন পাশ করেছেন, কতজন ফেল করেছেন।”