পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীই , হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট 

Written by SNS June 20, 2023 1:48 pm
কলকাতা , ২০ জুন –  হাইকোর্টের নির্দেশেই সিলমোহর দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যে  পঞ্চায়েত ভোট হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই এমনই নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চে । সেই মামলায়  বিচারপতিরা জানান, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। অর্থাৎ, সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই ভোট করতে হবে। 

সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার পর্যবেক্ষণে বলে, ‘নির্বাচন করানো মানে হিংসার লাইসেন্স দেওয়া নয়। নির্বাচন ও হিংসা একসঙ্গে চলতে পারে না। রাজ্যে ২০১৩ ও ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে গন্ডগোলের উদাহরণ আছে। প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করতে পারছেন না। করলেও হিংসার সম্মুখীন হচ্ছেন।’

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, ‘নির্বাচন ঘোষণার পরের দিনই হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে। মনোনয়ন পর্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কেন্দ্রের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।’

কিন্তু তারপরও কি হিংসার ঘটনা আটকানো গেছে, কমিশনের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যে কোনওরকম অশান্তি হবে, সেটা কাম্য নয়। হাইকোর্ট যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে, তাতে অসুবিধার কিছুদেখছি না।’ 

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণার পরের দিনই মামলা করা হল। তখন মনোনয়ন পর্ব চলছে। মনোনয়ন পর্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন কেন্দ্রের ১ কিমি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের পুলিশ সহযোগিতা করেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছে। আমাদের স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করার কাজ চলছিল। তা ছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টি রাজ্য দেখে। এখানে কমিশনকে সরাসরি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।’’
বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, ‘‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা আপনাদের এক্তিয়ারে নয়, তা হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চিন্তিত কেন? আপনারা আপনাদের কাজ করুন। যেখান থেকেই বাহিনী আসুক, আপনাদের অসুবিধা কোথায়?’’ এর পর কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকরতে আমরাও নিরাপত্তার দাবি করি। কিন্তু এখানে হাই কোর্ট আমাদের উপর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে। সেটা আমাদের কাজ নয়।’’

প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে শুনানি চলার পর বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে, তার কোনও যৌক্তিকতা রয়েছে বলে আদালত মনে করছে না। তাই তা খারিজ করে দেওয়া হল। কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে সেটাই বহাল থাকবে।