ইম্ফল, ১৯ সেপ্টেম্বর – ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর। পাঁচজন সশস্ত্র যুবকের গ্রেপ্তারির পর নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছে মেই তেই মহিলা সংগঠন মেইরা পাইবির। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্তব্ধ ইম্ফল উপত্যকা। পুলিশ সূত্রে খবর শনিবার পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। আগ্নেয়াস্ত্র ও সেনার পোশাক নিজেদের কাছে রাখার অপরাধে তাদের আটক করা হয়। এরপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে। পোরমপট থানায় প্রতিবাদ দেখাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এর জেরে কয়েকজন বিক্ষোভকারী এবং র্যাফের জওয়ান আহত হন। এরপরই ধৃতদের মুক্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দেয় মেইরা পাইবি-সহ স্থানীয় পাঁচটি ক্লাব। সোমবার ইম্ফল ইস্ট, ইম্ফল ওয়েস্ট, খুরাই, কংবা, বিষ্ণুপুর, থৌবলের মতো এলাকায় প্রতিবাদ দেখান মেই তেই গোষ্ঠীর মহিলারা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন তাঁরা।
এই বিষয়ে, অল লাংথাবল কেন্দ্র ইউনাইটেড ক্লাব কো-অর্ডিনেটিং কমিটির সভাপতি ইয়ুমনাম হিটলার বলেন, “যে পাঁচ যুবকদেরর গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী। কুকি-জো জঙ্গিদের হাত থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করতে তারা কাজ করে। নিরাপত্তাবাহিনী ঠিকমতো কাজ করতে ব্যর্থ। আমরা ওই যুবকদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।” প্রশাসন যদি ওই যুবকদের মুক্তি না দেয় তাহলে প্রতিবাদ আরও জোরালো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ইয়ুমনাম।
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্ধের প্রভাব পড়ে রাজধানী ইম্ফলে। দোকান-বাজার বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় যান চলাচলের সংখ্যাও হাতেগোনা। গত পাঁচ মাস ধরে মেই তেই-কুকি গোষ্ঠীর হিংসার জেরে বিপন্ন মণিপুরের জনজীবন। চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গত সপ্তাহেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য থেকে মৃত্যুর খবর মেলে। খুন করা হয় মণিপুরের এক সেনাকর্মীকে।
মেইরা পাইবি এবং অল লাংথাবল কেন্দ্র ইউনাইটেড ক্লাব-সহ ইম্ফলের পাঁচটি স্থানীয় ক্লাব সোমবার মধ্যরাতে ঘোষণা করে মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা রাজ্য জুড়ে বন্ধ পালন করা হবে। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে সোমবারও পূর্ব ইম্ফলের খুরাই, পশ্চিম ইম্ফলের কাকওয়া, বিষ্ণুপুর জেলা এবং থৌবলেও বহু জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
