• facebook
  • twitter
Friday, 13 June, 2025

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে খোয়া যাওয়া এক লক্ষ টাকা ফেরত দিল পুলিশ

সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বড়বাজার অঞ্চলে বাজার করতে এসে হারিয়ে ফেলেছিলেন এক লক্ষ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি সহ ব্যাগ।

সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বড়বাজার অঞ্চলে বাজার করতে এসে হারিয়ে ফেলেছিলেন এক লক্ষ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি সহ ব্যাগ। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির হাতে তাঁর খোয়া যাওয়া এক লক্ষ টাকা সমেত ব্যাগ ফেরত দিল হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের ওসি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছটা নাগাদ এমজি রোড ও স্ট্যান্ড রোডের সংযোগস্থলে ডিউটিতে ছিলেন হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের ওসি সৌভিক চক্রবর্তী। হঠাৎই তিনি দেখতে পান রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে একটি ছোট কালো ব্যাগ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তিনি ওই ব্যাগটি খুলে দেখতে পান তার মধ্যে রয়েছে এক লক্ষ টাকা এবং ব্যাংক সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি।

তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যাঁর ব্যাগ খোয়া গিয়েছে, তাঁকে এই ব্যাগ ফেরত দিতে হবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। খোঁজ শুরু হয় খোয়া যাওয়া ব্যাগটির মালিকের। ব্যাগের ভেতর থেকে পাওয়া যায় একটি ফোন নাম্বার। সেই নাম্বারে ফোন করে জিজ্ঞাসাবাদ করায় জানতে পারা যায়, বড়বাজারে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি গিয়েছিলেন তাঁর বাড়ির সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য কিছু কেনাকাটা করতে। তিনি সম্পর্কে ওই ব্যক্তির আত্মীয় হন। এবারে সেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। যে ব্যক্তিকে ফোন করা হয়েছিল তাঁর কাছে পাওয়া যায় ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম্বার। হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের তরফ থেকে ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ফোন করে পুলিশ জানতে পারে, সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য বড় বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন তিনিই। এবং তাঁর কাছ থেকেই খোয়া গিয়েছে কালো রঙের ওই ব্যাগটি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম অনিল কুমার গুপ্তা। তাঁর বাড়ি লেক টাউনে। তিনি বিশেষভাবে তৈরি স্কুটিতে চড়ে বড় বাজারে গিয়েছিলেন জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে। তাঁর সঙ্গে ছিল কালো ব্যাগের মধ্যে রাখা এক লক্ষ টাকা। সেটাই তিনি রাস্তায় হারিয়ে ফেলেন। পুলিশের তরফ থেকে অনিল কুমার গুপ্তাকে বলা হয় উপযুক্ত প্রমাণ সহ হাওড়ার ট্রাফিক গার্ডে দেখা করার জন্য। এরপর সমস্ত প্রমাণ খতিয়ে দেখে অবশেষে অনিল বাবুর হাতে তুলে দেওয়া হয় কালো ব্যাগের মধ্যে থাকা এক লক্ষ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। টাকা পেয়ে বেজায় খুশি অনিল কুমার গুপ্তা।

টাকা হাতে নিয়ে রীতিমতো কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন এই টাকা না পেলে আমার বাড়ির সামাজিক অনুষ্ঠানটাই বন্ধ হয়ে যেত। কি করে যে আপনাদের ধন্যবাদ জানাব বুঝতে পারছি না। আর অন্যদিকে হাওড়া ট্রাফিক গার্ডের ওসি, সৌভিক চক্রবর্তী জানালেন, ‘আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি। তবে ওই ব্যাগ অন্য কারও হাতে পড়লে কি যে হতো, এটা ভাবতেই ভয় লাগছে। তবে একজন প্রতিবন্ধী মানুষের হাতে তাঁর খোয়া যাওয়া ব্যাগ তুলে দিতে পেরেছি, এর থেকে আর কি ভালো বিষয় হতে পারে।’