অবশেষে সুবিচার পেলেন নদিয়ার শিক্ষিকা নাহিদা সুলতানা। নাহিদাকে আবার আপার প্রাইমারি স্কুলে নিয়োগ করার এবং কাজে তাঁর যোগদানের সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। চাকরি হারিয়ে বারংবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন।একাধিকবাার আবেদনও করেছেন। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে পায়ের নিচের হারানো জমি খুঁজে পেয়েছেন শিক্ষিকা নাহিদা সুলতানা। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন নাহিদা সুলতানাকে ফের আপার প্রাইমারি স্কুলে নিয়োগ করতে হবে। তাঁর কাজে যোগদানের সময়সীমাও বাড়িয়ে দিতে হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের লাঙ্গুলি ২ বানেশ্বরী জুনিয়র হাইস্কুলে নবম-দশম শ্রেণিতে কর্মরত ছিলেন নাহিদা সুলতানা। পরে আপার প্রাইমারি অর্থাত পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির মেধা তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এসএসসি থেকে নিয়োগপত্র পেয়েছেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। নিয়মমাফিক অনুমোদনের ৩ মাসের মধ্যে নতুন স্কুলে যোগদান করতে হবে। নাহিদা তখন সেই চাকরি ছাড়তে না পারায় নির্ধারিত সময়ে আপার প্রাইমারিতে যোগ দিতে পারেননি। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি চলে যায়। তখনই নাহিদা এসএসসি-র কাছে আবেদন করেন, তাঁর কাজে যোগদানের সময়সীমা বাড়ানো হোক। প্রসঙ্গত, আগে নাহিদা নদিয়ার ঝুরুলি আদর্শ বিদ্যাপীঠে নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষকতা করতেন।
নাহিদার পক্ষে আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী আদালতে বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিজেরই সময়সীমা বাড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে। নাহিদা নিয়ম মেনেই আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তা বিবেচনা করা হয়নি। উল্টে কমিশনের সিদ্ধান্তে তাঁর পুরনো চাকরিও চলে গিয়েছে।
অন্যদিকে এসএসসির তরফে আইনজীবী সুতনু পাত্র জানান, নাহিদা নিজেই ইচ্ছাকৃতভাবে কাজে যোগ দেননি। সেই কারণেই তাঁর অনুমোদন বাতিল হয়ে যায়। সময়সীমা বাড়ানো এসএসসির এক্তিয়ার হলেও, এক্ষেত্রে সেই সুযোগ নেই। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য মন্তব্য করেন, ‘মানবিকভাবে বিষয়টিকে দেখা উচিত ছিল। একটি চাকরি হারানোর অর্থ গোটা পরিবারের উপর আর্থিক বিপর্যয় নেমে আসা।’