শোক প্রকাশ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর

৪০ দিনের যুদ্ধের অবসান। রবিবার বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ লড়াই থামিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।শোক প্রকাশ রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর।

Written by SNS Kolkata | November 16, 2020 3:41 pm

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (File Photo: IANS) and (SNS)

৪০ দিনের যুদ্ধের অবসান। রবিবার বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ লড়াই থামিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

এই অভিনেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ রবিবার টুইটে লেখেন, নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে দাদাসাহেব ফালকে, পদ্মভূষণ, লিজিয়ন ডি ওনারের মতন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তাঁর পরিবারবর্গ, বিশ্বজোড়া অনুরাগী এবং চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্তদের প্রতি সমবেদনা জানাই। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে ভারতীয় চলচ্চিত্র একজন কিংবদন্তিকে হারালাে। ‘অপু’ ট্রিলজি সহ সত্যজিৎ রায়ের একাধিক কালজয়ী সৃষ্টিতে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। অভিনয়ের শিল্পে তিনি অসাধারণ অবদান রেখে গিয়েছেন।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন বাংলায় টুইট করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদী। তিনি লেখেন, শ্রী সৌমিত্র চট্টোপাধায়ের প্রয়াণ চলচ্চিত্র জগত, পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর কাজের মধ্যে বাঙালির চেতনা, ভাবাবেগ ও নৈতিকতার প্রতিফলন পাওয়া যায়। তার প্রয়াণে আমি শােকাহত। শ্রী চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানাই। ওঁ শান্তি।

শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, এদিন তাঁর মৃত্যুতে শােক জ্ঞাপন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি লেখেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যাজীর মৃত্যু সংবাদে আমি মর্মাহত। তিনি একজন অনবদ্য অভিনেতা ছিলেন, যিনি বাংলা সিনেমাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় সিনেমা একটি রত্নকে হারিয়েছে। আমার শুভকামনা তার পরিবার এবং পরিজনদের সঙ্গে রয়েছে। ওম শান্তি শান্তি শান্তি।

এদিন সৌমিত্র চট্টোপাধায়ের শেষ যাত্রায় সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শােকাতুর মুখ্যমন্ত্রী এই অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখেন, বাংলার তথা ভারতের চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তী নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ায় বাংলার সকল মানুষের হয়ে আমি আমাদের গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। যে প্রতিভাবান মানুষদের জন্য বিশ্বের দরবারে আমরা প্রতিনিধিত্ব পেয়েছি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন।

তিনি আরও জানান, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার বিশেষ শ্রদ্ধা ও প্রীতির সম্পর্ক ছিল। আমাদের আমন্ত্রণে তিনি বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার গ্রহণ করতে নজরুল মঞ্চে যেমন আমাদের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, আবার পাশাপাশি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উজ্জ্বাধনী অনুষ্ঠানে নেতাজী ইন্ডাের স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকেছেন। তাঁর সসম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ, আন্তরিক ব্যবহারে তিনি সকল সময়ে আমাদের চিত্ত স্পর্শ করেছেন। তাঁর মৃত্যু বাংলার জনজীবনে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল। আমি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার-পরিজন ও অসংখ্য অনুরাগীর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড়া শােক প্রকাশ করে টুইটে লেখেন, কিংবদন্তি বাঙালি অভিনেতা, শ্ৰী সৌমিত্র চ্যাটার্জীর মৃত্যুতে গভীরভাবে বেদনাহত তার দীর্ঘ কর্মজীবন এবং তাঁর। অভিনয়ের দক্ষতার জন্য তিনি অনেক প্রশংসা অর্জন করেছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর পরিবার ও অনুগামীদের প্রতি আমার সমবেদনা। ওম শান্তি।

প্রাক্তন বাম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, অত্যন্ত বেদনা এবং দুঃখের খবর যে সৌমিত্রদার জীবনাবসান হয়েছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বাংলার সংস্কৃতি জগতে রবীন্দ্রউত্তর ভারত বর্ষ মূলত বাংলার সংস্কৃতি তাতে একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। সৌমিত্র চট্টোপাধায় অভিনেতা, লেখক, কবি, আবৃত্তিকার এবং সর্বোপরি একজন প্রগতিশীল মানুষ।

স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, বামপন্থার প্রতি তাঁর একনিষ্ট ভালােবাসা ছিল এবং তিনি বহুবার আমাদের সে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন।