• facebook
  • twitter
Sunday, 14 December, 2025

আবহাওয়া অনুকূল নয়, পাহাড়ে চা উৎপাদন প্রায় তলানিতে

চলতি মরশুমে দার্জিলিংয়ে চায়ের উৎপাদন নিয়ে চিন্তায় পড়েন বাগান মালিকরা। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য ক্রমাগত বাড়ছে দুশ্চিন্তা।

ফাইল চিত্র

চলতি মরশুমে দার্জিলিংয়ে চায়ের উৎপাদন নিয়ে চিন্তায় পড়েন বাগান মালিকরা। প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য ক্রমাগত বাড়ছে দুশ্চিন্তা। গত কয়েকবছর ধরে বেড়ে চলা লোকসানের জন্য চা শিল্প থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন মালিকরা। এছাড়া শ্রমিকদের আন্দোলনের জন্যেও বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। বেশিরভাগ মালিকই বাগান বিক্রি করে দিতে চাইছেন। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না সঠিক মূল্যে বাগান কিনতে ইচ্ছুক ক্রেতা।
সৌরাণি, যুগারী, গয়াবাড়ির মতো চা বাগানগুলিতে কাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চা বাগান পরিচর্যার কাজও হচ্ছে না বললেই চলে।

এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের ৮৭টি চা বাগানের মধ্যে অন্তত ৪০টির মালিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। শুধুমাত্র চলতি মরশুমই নয়, গত তিন-চার বছরে প্রচুর লোকসান হয়েছে মালিকদের। পাহাড়ের চা বণিকসভা সূত্রের খবর, ২০২৩ সালে দার্জিলিং পাহাড়ে চা পাতা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬.১ মিলিয়ন কেজি। ২০২৪ সালে উৎপাদন কমে হয়েছে ৫.১ মিলিয়ন কেজি। এবার উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমতে পারে বলে ধারণা চা বণিকসভাগুলির। এই পরিস্থিতিতে বিপদে পড়েছেন চা মালিকরা। সব বিক্রি করে বেরিয়েও আসতে পারছেন না তাঁরা। কারণ চা বাগানের সঠিক মূল্য দিতে পারবেন এরকম ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। লোকসানের জন্যেও অনেক ক্রেতা বাগান কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না।

Advertisement

চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি শুরু না হওয়ায় মার খাচ্ছে চা উৎপাদন। বাগানের গাছগুলি প্রায় ন্যাড়া হয়ে আছে। পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা অনেকটাই কম থাকছে। এই আবহাওয়া চা উৎপাদনের জন্য উপযোগী নয়। সেই কারণে এবার ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চায়ের মরশুম শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত অনেক কারখানায় চা তৈরির কাজ শুরুই হয়নি।

Advertisement

আবহাওয়া ও লোকসানের মতো জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই শ্রমিকদের আন্দোলনের জন্য চা শিল্পের অবস্থা আরও খারাপ। আগামী পুজোর বোনাস এখনই ঘোষণার দাবি জানিয়ে মিরিক-সহ পাহাড়ের একাধিক চা-বাগানের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেছেন। এর জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চা পাতা তোলার কাজ।

মরশুম শুরু হওয়ার পর থেকে আগামী দুই মাস চা বাগানগুলিতে ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’-এর পাতা তোলার কাজ হয়। ওই পাতা থেকে তৈরি হয় অন্তত দুই মিলিয়ন কেজি চা। জানা গিয়েছে, এই পরিমাণ মোট উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশ। বলা হয়, এই দুই মাস যে চা তৈরি হয় তা মরশুমের সেরা দার্জিলিং চা। এই চা–ই জার্মানি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ডে রপ্তানি করা হয়। তবে এবার আবহাওয়ার কারণে গাছে পাতা না থাকায় বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে চলেছে চা–বাগানগুলি। জানা গিয়েছে, লোকসানের জন্য দার্জিলিং পাহাড়ের ৮৭টি বাগানের মধ্যে ১৫টি ইতিমধ্যেই বন্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষ। ২৫টি চা বাগান মালিক ক্রেতা খুঁজছেন।

Advertisement