কেন্দ্রে এবার জনগণের সরকার: মমতা ব্যানার্জি

কেন্দ্রে এবার হবে জনগণের সরকার। বৃহস্পতিবার মালদায় নির্বাচনী সভায় একথা বললেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘আর নেই দরকার, বিজেপি সরকার’। এটা বাংলার নয়, দিল্লির নির্বাচন।

Written by SNS Malda | April 19, 2019 7:52 am

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৌসম নূর (Photo: IANS)

কেন্দ্রে এবার হবে জনগণের সরকার। বৃহস্পতিবার মালদায় নির্বাচনী সভায় একথা বললেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘আর নেই দরকার, বিজেপি সরকার’। এটা বাংলার নয়, দিল্লির নির্বাচন। গােটা দেশেই বিজেপি উৎখাতের ডাক উঠেছে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, কেরল বিজেপিশুন্য হবে। অন্যান্য রাজ্যেও বিজেপির অবস্থা খারাপ। মানুষ আর তাদের চাইছে না। এরাই ধর্মের নামে দেশকে ভাঙতে চাইছে।

এদিন মালদায় তিনটি সভা করেন মমতা। দুপুর দেড়টায় প্রথম সভাটি হয় রতুয়া থানার সামসি কলেজ মাঠে। দ্বিতীয় সভাটি কালিয়াচক থানার সুজাপুর হাতিমারি মাঠে এবং শেষ সভাটি করেন বামনগােলা থানার পাকুয়াহাট ময়দানে। তিনটি সভাতেই ছিল ভিড়। প্রখর তাপকে উপেক্ষা করে দলে দলে মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যােগদান করে।

এদিন দুপুর দেড়টায় সামসি কলেজ মাঠে সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বিধানসভায় আপনারা মালদা থেকে তৃণমূলের কাউকে জয়ী করেননি। এটা আমার কাছে আক্ষেপ থেকে গিয়েছে। উত্তর মালদার তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নূর সাংসদ। দলবদল করার সময় ওকে অনেকে অনেক কথাই বলেছে। কিন্তু আমি ওকে বলেছি, তুমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ। একজন লড়াকু নেত্রী ও লড়াকু দলের সাথে যােগ দিয়েছে মৌসম। আপনারা মৌসমকে জয়ী করুন। যা চাইবেন তাই পাবেন। কেন্দ্রে মােদি ও তাঁর দলবলরা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এরা স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিস্ট। মৌসম লড়াকু মেয়ে। আপনারা এর যােগ্য জবাব দিন ভােটের মাধ্যমে। মনে রাখবেন একটা ভােট মােদির গালে একটা থাপ্পড়।’

সামসির এই জনসভা জনসমুদ্রের চেহারা নেয়। মমতা মঞ্চে উঠতেই হুড়ােহুড়ি পড়ে যায়।

এদিন দুপুরে সামসির সভা শেষ করে মৌসম নূরকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে মুখ্যমন্ত্রী যান কালিয়াচকের সুজাপুর হাতিমারি মাঠে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মালদায় আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি। পলিটেকনিক, আইটিআই করেছি। সিল্ক সেন্টার, আইটি সেন্টার হয়েছে। নতুন এয়ারপাের্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখানে মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে ভালাে চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তােলা হয়েছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড সহ অন্যান্য রাজ্যের রােগীরা এসে চিকিৎসার সুযােগ নিচ্ছে।’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আর কতদিন আপনারা গনিখনের নাম করে ভােট দেবেন। কংগ্রেস তাে এখানে সিপিএমের কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এবার আপনাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে মােয়াজ্জেম হােসেনের মতাে এক চিকিৎসক প্রার্থী হয়েছেন। তাঁকে জয়ী করতে হবে।’ কালিয়াচকের মঞ্চে মালদার দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মােয়াজ্জেম হােসেন ও মৌসম নূরের হাত ধরে ভােট চান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই রাজ্যে উন্নয়নের কারিগর হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কৃষকদের খাজনা মকুব করা হয়েছে। শস্য বীমার টাকা ১০০ শতাংশ দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, ‘এনআরসি চালু করতে দেব না। ওরা এনআরসি করে তাড়ানাের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জনগণ এবার এনবিসি তৈরি করবে। অর্থাৎ ন্যাশনাল বিদায় সার্টিফিকেট। বাংলায় কংগ্রেস সাইনবাের্ড হয়ে গিয়েছে। আর মােদিকে কেউ চাইছে না। বাংলা সবাইকে নিয়ে চলে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সবরকম সুবিধা পাচ্ছে। অথচ পাঁচ বছর ধরে লুটেরাদের নিয়ে দেশ চলছে দিল্লিতে। বাংলায় একটি আসন পাবে না বিজেপি।’

মমতা শেষ সভাটি করেন পাকুয়াহাট এলাকায়। বলেন, আরএসএসের প্রচারকেরা মালদায় পড়ে আছে। চৌকিদার থাকবে না। চৌকিও থাকবে না। রাজ্যের উন্নয়নের সুফল পেয়েছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। সমস্ত ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে বাংলা। মােদি জমানায় ১২ হাজার কৃষক আত্মঘাতী হয়েছে। আদিবাসী কৃষকদের জন্য কাজ করেছে রাজ্য সরকার। তিনি বলেন সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। স্বামীজির হিন্দু ধর্মকে বিশ্বাস করি। কিন্তু হিন্দু ধর্মের বদনাম করছে কেউ কেউ। আমাকে পুরীর মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি সারাক্ষণ পিছনে লেগে আছে। কিন্তু আমাকে চমকালে আমি গর্জাই। পাকুয়ার সভা শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মালদায় ফিরে সন্ধ্যায় পদযাত্রা করেন। শহরের রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশ থেকে নেতাজি মােড় পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তিনি।