আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ধর্ষণ–খুনের ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। সোমবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরজি করের ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম মানতে চাননি শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। এটা শুনে মমতা স্তম্ভিত হয়েছেন। পাশাপাশি এক্স হ্যান্ডলে তিনি সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে সরব হন। কীভাবে বিচার শেষে এই মামলাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে মনে করা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মামলাকে ‘সংবেদনশীল’ বলে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
আরজি কর মামলার রায় ঘোষণার সময় মমতা হেলিকপ্টারে করে মুর্শিদাবাদ থেকে মালদহে যাচ্ছিলেন। মালদহের হেলিপ্যাডে নামার পরই তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে আরজি কর মামলার রায় সম্পর্কে জানতে পারেন। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তিনি ফাঁসি চেয়েছিলেন, এই রায়ে একেবারেই সন্তুষ্ট হননি। পাশাপাশি এদিন সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। দোষীর ফাঁসির সাজা হলে তিনি মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Advertisement
মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আরজি করের রায়ে তিনি খুশি নন। প্রথম দিন থেকেই তিনি দোষীর ফাঁসির দাবি করছিলেন। এদিনও তিনি সেই দাবিতেই অনড় রয়েছেন বলে জানান। আরজি কর ইস্যুতে বলার সময় মমতার বক্তব্যে উঠে আসে জয়নগর, ফরাক্কা এবং গুড়াপের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা। এই তিনটি মামলাতেই ৫৪ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে দোষীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। আরজি কর মামলাটিও রাজ্যের হাতে থাকলে অনেকদিন আগেই সঠিক বিচার পাওয়া যেত বলে দাবি করেন মমতা। এরপরই পরোক্ষভাবে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। আরজি কর মামলাকে গুরুত্বপূর্ণ মামলা বলেও উল্লেখ করেন।
মমতা এদিন বলেন, ‘আমি জানি না, কীভাবে লড়াই করেছে, কী যুক্তি দিয়েছে। সবটাই সিবিআই করেছে। আমাদের হাত থেকে ইচ্ছা করে মামলাটি কেড়ে নিয়ে গেল। আমরা আগেই বলেছিলেন, আমরা তদন্ত করতে না পারলে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দিন। তাতে আমাদের আপত্তি থাকত না। আমরা চাই বিচার হোক। এই নরপিশাচদের চরমতম শাস্তি হওয়া উচিত। আরজি করের রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। অন্তত ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’
সোমবার সকালে সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণার আগেও মমতাকে আরজি কর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেই সময় তিনি বিশেষ কিছু মন্তব্য করতে চাননি। সেই সময় তিনি দাবি করেছিলেন, কীরকমভাবে মামলাটি সাজানো হয়েছে তার উপর মামলাটির রায় নির্ভর করবে। আরজি করের ঘটনার প্রথম দিনের মতো এদিনও তিনি ফাঁসির দাবিতেই সরব হন। কিন্তু শিয়ালদহ আদালতের বিচারক এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। এরপর এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে আরজি কর মামলায় দোষীর ফাঁসির দাবিতে হাইকোর্টে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন মমতা। আরজি করের ঘটনাকে জঘন্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
Advertisement



