পুজোতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা, বন্যার আশঙ্কায় নবান্নে মনিটরিং কমিটি

এদিকে ডিভিসি জল ছাড়ার জন্য রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। ডিভিসি’র ছাড়া জল ইতিমধ্যেই উদয়নারায়ণপুরে ঢুকে পড়েছে।

Written by SNS Kolkata | October 2, 2019 5:18 pm

প্রতিকি ছবি (Photo: IANS)

পাঁজিতে লেখা রয়েছে দেবীর ঘােটকে আগমন, ঘােটকে গমন। অর্থাৎ পুরাণমতে আবহাওয়া থাকবে শুকনাে। কিন্তু সেসব তত্ত্ব মিথ্যে হয়ে গিয়েছে প্রকৃতির খামখেয়ালীপনায়। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন এবার বর্ষার আবাহন হয়েছে দেরিতে। বর্ষার গমনও হবে দেরিতে। ফলে এবার পুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে।

এদিকে ডিভিসি জল ছাড়ার জন্য রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। ডিভিসি’র ছাড়া জল ইতিমধ্যেই উদয়নারায়ণপুরে ঢুকে পড়েছে। ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সংযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। না জানিয়ে জল ছাড়ার জন্য মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে ডিভিসি’কে দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসির জল ছাড়ার জন্য মালদহ, মুর্শিদাবাদ, ফরাক্কায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য চৰ্বিশ ঘন্টার একটি মনিটরিং কমিটি তৈরি করে দেওয়া হল নতুন মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে।

পুজোতে এবার বৃষ্টির সম্ভাবনা জোরালাে করে দিচ্ছে সাগরের ওপরে তৈরি হওয়া উচ্চচাপ বলয়। যার জেরে বিগত ক’দিন ধরে ভাসছে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ। মঙ্গলবার তৃতীয়ার দিন আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, পঞ্চমীর দিন পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকলেও পুজোর কটাদিন বর্ষা চলবেই। ষষ্ঠী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত বজ্র-বিদ্যুৎ সহযােগে বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। নবমী এবং দশমীতে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। তবে এর মধ্যে আশার কথা, দিনের বেলা বৃষ্টি হলেও রাতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে রাতের পুজো প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়াতে অসুবিধে হবে না।

এদিকে পুজোর মধ্যেই ডিভিসি’র জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। এর মধ্যে ফরাক্কায় জল ছাড়ার জন্য ৮০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভেসে গিয়েছে। মালদহ ও মুর্শিদাবাদে বন্যা পরিস্থিতি হলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তা সরজমিনে খতিয়ে দেখতে বিপর্যয় মােকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খানকে। পাঠানাে হচ্ছে। নতুন মুখ্যসচিব রাজীবা সিন্হার নেতৃত্বে সেচ, কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবদের নিয়ে একটি ২৪ ঘন্টার মনিটরিং কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটি একদিকে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে অন্যদিকে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সংযােগ রক্ষা করবে।

মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার নবান্নে বলেন, না জানিয়ে জল ছাড়ার জন্যই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ড্রেজিং হয় না বলেই প্রতিবছর ডিভিসি’র ছাড়া জলে বন্যার মতাে অবস্থা হয় এই বাংলায়। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে জানিয়েও কোনও লাভ হয় না। ভৌগােলিকভাবে এই পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা অনেকটা নৌকোর মতাে। নেপাল, ভূটানে বেশি বৃষ্টি হলে বা নদীগুলি দুকূল ছাপিয়ে গেলে সেই জলে ভেসে যায় এই বাংলা।